গ্রেডেশন নিয়ে বিপাকে প্রাথমিক শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

গ্রেডেশন নিয়ে বিপাকে প্রাথমিক শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা তৈরির কাজ চলছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শিক্ষকদের গ্রেডেশনের তথ্য সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তবে, এ নিয়ে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের শিক্ষকদের অভিযোগ, অন্য উপজেলা থেকে বদলি হয়ে আসা শিক্ষকদের তথ্য এন্ট্রির পর গ্রেডেশন তালিকা তাদের অবস্থান সবার শেষে দেখাচ্ছে। এতে পদোন্নতি নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করা সহকারী শিক্ষক এমনকি চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের দুশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি। সারাদেশের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব অভিযোগ জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেডেশন তথ্য এন্ট্রির কাজ চলছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষকদের তথ্য সার্ভারে এন্ট্রি করছেন। আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেডেশন তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু গ্রেডেশন তালিকা দেখে মাথায় হাত পরেছে শিক্ষকদের। 

রাজধানীর পাশ্ববর্তী একটি উপজেলায় চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত একজন সহকারী শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছি। পদোন্নতির আশায় ছিলাম। কিন্তু গ্রেডেশন তালিকা দেখে আতঙ্কিত আমরা। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে তথ্য এন্ট্রির পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেডেশন তালিকা এসেছে। জানতে পেরেছি সে তালিকায় আমরা অনেক নিচে। কারণ আমি বদলি হয়ে এসেছি অর্থাৎ বহিরাগত শিক্ষক। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পরিচালিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও আমরা আগে অবস্থান করছেন গ্রেডেশন তালিকায়। এভাবে হলে আমাদের পদোন্নতি পাওয়া হবে না। 

এদিকে বেশ কয়েকবছর সহাকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা বেশ কিছু দিন ধরে কর্মরত আছি। কিন্তু বহিরাগত শিক্ষক হওয়ায় অর্থাৎ বদলি হয়ে এ উপজেলায় আসায় গ্রেডেশন তথ্য এন্ট্রির পর আমাদের অবস্থান সবার শেষে দেখাচ্ছে। আমাদের আর পদোন্নতি পাওয়া হবে না। এ জটিলতায় পরা শিক্ষকরা সবাই আতঙ্কিত।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকদের গ্রেডেশন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকমিশন পিএসসির মাধ্যমে শিক্ষকদের পদোন্নতি হবে। শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহের পর তা পিএসসিতে পাঠানো হবে।

বিষয়টি নিয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে কথা হয় মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে। তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বহিরাগত শিক্ষকদের তথ্য এন্ট্রির পর আসা গ্রেডেশন তালিকায় তাদের অবস্থান সবার শেষে দেখাচ্ছে। যেসব শিক্ষক অন্য উপজেলা থেকে বদলি হয়ে এসেছেন তাদের ক্ষেত্রে এ জটিলতা দেখা যাচ্ছে। আমরা ঊর্ধ্বতর কর্তপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। 

শিক্ষা কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, সুষ্ঠুভাবে তথ্য পাঠিয়েও এ জটিলতা দেখা যাচ্ছে। শিক্ষকরা আমাদের কাছে এসে কান্নাকাটি করছেন। তারা পুরো কর্মজীবনের অর্জন হারানোর শঙ্কায় আছেন। এক্ষেত্রে মাঠপর্যায় থেকে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা তথ্য সংগ্রহ করে তা সার্ভারে এন্ট্রি করি। পরে, অধিদপ্তর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেডেশন তালিকা তৈরি করে সরবরাহ করা হয়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনূর আল-আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একজন শিক্ষক দীর্ঘদিন চাকরির পরই তিনি চলতি দায়িত্ব পান। আর একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবনে তার বদলি হবেই। এখন বদলি হওয়ায় যদি শিক্ষকদের সিনিয়রিটি নিয়ে সমস্য হয় তা মেনে নেয়া যায়না। শিক্ষকরা দীর্ঘদিন কর্মরত এখন গ্রেডেশন তালিকায় তার অবস্থান দেখাচ্ছে সবার শেষে। নতুন যোগদান করা শিক্ষকদেরও নিচে তার অবস্থান দেখাচ্ছে। এতে শিক্ষকরা হাতাশ। 

তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, নীতিনির্ধারকরা হুটহাট ডিসিশন নিয়ে কিছু কাজ করতে চান। কিন্তু তা কিভাবে হচ্ছে বা হবে সে বিষয়ে আগে যাচাই করা হয়না। এতে ভোগান্তিতে পরতে হয় মাঠপর্যায়ের শিক্ষকদের। শিক্ষকরা দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়া হয়। আমর শিক্ষকরা দ্রুত এ জটিলতার নিরসন চাই।  

এ বিষয়ে জানতে চাইল শুক্রবার (১৮ জুন) দুপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গ্রেডেশনের বিধান অনুসারেই তাদের তালিকা হওয়ার কথা। তবে, আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE    করতে ক্লিক করুন।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035429000854492