ঘরেও নিরাপদ নয় কিশোরীরা - দৈনিকশিক্ষা

ঘরেও নিরাপদ নয় কিশোরীরা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে মান-সম্মান নিয়ে বসবাস করাই কঠিন হয়ে উঠেছে। খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি—অক্টোপাসের মতো ঘিরে ধরেছে সমাজের নিরীহ মানুষকে। তাদের জীবনযাপনই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। ভাবা যায়, ১৩ বছরের এক স্কুলছাত্রী নানা-নানির সঙ্গে রাতে ঘুমিয়েছিল। এক সন্ত্রাসী পাটখড়ির বেড়া ফাঁক করে ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে তুলে নিচ্ছিল ধর্ষণ করার জন্য। মেয়েটি চিৎকার করলে তার হাতে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। এ সময় মেয়েটির নানা সন্ত্রাসীকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাঁকেও বুকে-পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। পাশের ঘর থেকে মেয়েটির মামা বেরিয়ে এলে তাঁকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে মেরেই ফেলা হয়। তাদের সম্মিলিত চিৎকারে গ্রামবাসী এগিয়ে এসে সন্ত্রাসীকে ধরে ফেলে। এরপর গণপিটুনিতে সন্ত্রাসীরও মৃত্যু হয়। শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায়। এ ঘটনার পর এলাকার দরিদ্র মানুষ তাদের কন্যা সন্তানদের নিয়ে কীভাবে বসবাস করবে? সোমবার (২৬ আগস্ট) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

ধর্ষণ ও ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার ঘটনা হু হু করে বাড়ছে। পত্রপত্রিকায় এ ধরনের খবরাখবরই বেশি। শুধু দরিদ্র মা-বাবার ভাঙা ঘরই নয়, রাস্তা-অফিস-স্কুল-কলেজ-মাদরাসা কোথাও আজ মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। মাতা-পিতা বা স্বজনদের নিরুদ্বিগ্ন থাকার কোনো উপায় নেই। গতকালের পত্রিকায়ই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সুনামগঞ্জে আরও চার কিশোরীকে ধর্ষণের খবর রয়েছে। প্রতিটি ঘটনাই হৃদয়বিদারক। তাদের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীও রয়েছে। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় রিকশায় করে যাওয়ার সময় কৌশলে নেশাজাতীয় খাবার খাইয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে দুই রিকশাওয়ালা। কেন এমন হচ্ছে? উত্তর একটাই—আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা, অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া, তদন্তের দুর্বলতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়া, অপরাধীদের মনে ভয় ধরানোর মতো দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হওয়া এবং এমনই আরও কিছু কারণ। ফলে অপরাধীরা আরও বেশি করে অপরাধ সংঘটনে উৎসাহিত হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার ঘটনায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ওই সন্ত্রাসী আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে। অনেকেই সেসব অপরাধের বর্ণনা দিয়েছে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবও তার সেসব অপরাধের কথা উল্লেখ করেছেন। এখন তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলেও এত দিন তাকে প্রতিরোধ করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক প্রতিরোধ অত্যন্ত জরুরি। যেখানেই বখাটেপনা দেখা যাবে, সেখানেই সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

দেশের অর্থনীতি এগোচ্ছে। সন্ত্রাসী ও অপরাধী মানসিকতার লোকজনের হাতেও বৈধ ও অবৈধ উপায়ে প্রচুর অর্থ আসছে। ফলে তাদের অপরাধ করার মাত্রাও বাড়ছে। তাদের হাত থেকে নিরীহ মানুষের জীবন, স্ত্রী-কন্যাদের মান-সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। ধর্ষণ ও ধর্ষণজনিত অপরাধের বিচার পর্যাপ্ত ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে দ্রুততর করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে দায়িত্ব পালনে সৎ ও নিষ্ঠার পরিচয় দিতে হবে। একই সঙ্গে শক্ত সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036790370941162