গত দু’দিন ধরে ঘরের পাকা মেঝে ঘামছে। টাইলস লাগানো থাকলে দেয়াল ঘামছে। এতে অনেকেই আতঙ্কিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই। তাপের সাধারণ নিয়ম মেনেই ঘামছে ঘরের মেঝে। এর সঙ্গে ভূমিকম্প বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের দূরতম সম্পর্কও নেই।
ঠাণ্ডা পানি রাখলে গ্গ্নাস বা বোতলের গায়ে যে কারণে শিশির বিন্দু জমে, সেই একই কারণে ঘামছে ঘরের মেঝে। এর কারণ,
বাইরের ও ঘরের মধ্যে তাপমাত্রার বিস্তর পার্থক্য। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রা হঠাৎ অনেক নিচে নেমে গেছে। মেঘ বৃষ্টির কারণে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম। কিন্তু দিনের বেলায় কড়া রোদ ও উচ্চ আর্দ্রতার কারণে হুট করেই চড়ছে পারদ। বাড়ছে তাপ। কিন্তু ঘরের ভেতরে রোদ প্রবেশ করতে না পারায় বাইরের মতো গরম অনুভূত হচ্ছে না। অর্থাৎ ঘরের বাইরে ও ভেতরে তাপমাত্রার বিস্তর পাথর্ক্য তৈরি হয়েছে। ঘরের ভেতরে ঠাণ্ডা থাকায়, বিশেষত মেঝে অন্য যে কোনো কিছুর তুলনায় বেশি ঠাণ্ডা হওয়ায় বাতাসে থাকা আর্দ্রতা (জলীয় বাষ্প) মেঝের সংস্পর্শে এসে পানিতে পরিণত হচ্ছে। অর্থাৎ বিন্দু বিন্দু ঘাম আকারে জমছে।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শামীম হাসান ভূঁইয়া বলেন, ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা পানির বোতল বের করে বাইরে রাখলে কিছু সময়ের মধ্যেই বোতলের গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি জমে। এর কারণ, বোতলের তাপমাত্রা বাতাসের তাপমাত্রার তুলনায় অনেক কম। ঠাণ্ডা বোতল যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে, তখন বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প পানিতে পরিণত হয়। কারণ পানি উচ্চ তাপে যেমন বাষ্পে পরিণত হয়, তেমনি বাষ্প নিম্ন তাপে আবার পানিতে পরিণত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক দিলারা জাহিদ বলেন, মেঝে ঘামার সঙ্গে ভূমিকম্প বা জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই। খুব স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কারণে মেঝে ঘামে।