চট্টগ্রাম নগরীর কর্নেল হাট সিডিএ আবাসিক এলাকার প্রভাতি মাধ্যমিক শিক্ষা নিকেতন নামক স্কুলে শেখ মুজিবুর রহমান প্রসঙ্গে চারটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) স্কুলটির চতুর্থ শ্রেণির বার্ষিক প্রান্তিক মূল্যায়ন-২০২৪ এর বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা ছিল। এতে ৬ নং প্রশ্নের অধীনে চারটি উপপ্রশ্নে শেখ মুজিবুর রহমানের গুণকীর্তনমূলক প্রসঙ্গ উঠে আসে। প্রশ্নগুলো এ রকম- ক. মুজিব কে ছিলেন? ‘মুজিব মানে মুক্তি’ দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন? খ. ‘মুজিব মানে রক্ত’ এখানে রক্ত দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. ‘আমি মুজিব ভক্ত’- এখানে মুজিব ভক্ত কারা? ঘ. ‘চিরকালের ভক্তি’ -বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? দুইটি বাক্যে লেখ।
এ দিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শেষে শিক্ষার্থীরা বাসায় ফিরলে প্রশ্নে মুজিববন্দনার ব্যাপারটি অভিভাবকদের নজরে আসে। সাথে সাথে বেশ কয়েকজন অভিভাবক স্কুলে উপস্থিত হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এবং অবিলম্বে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও এই বিতর্কিত প্রশ্নপত্র তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানান।
তারা বলেন, ষোল বছর ধরে এই দেশে অযাচিত মুজিববন্দনা করা হয়েছে। পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আগ্রাসী শিক্ষাব্যবস্থার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দেশে একটি গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও যারা এ ধরনের হীন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তারা নিঃসন্দেহে ফ্যাসিবাদের দোসর।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রভাতি মাধ্যমিক শিক্ষা নিকেতনের সভাপতি, চট্টগ্রাম জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) মো. আবু রায়হান বলেন, ‘বিষয়টি আমি এখনো জানি না। আমাকে কেউ জানায়নি। আপনার মাধ্যমে জানলাম মাত্র। আমি খবর নিচ্ছি।’
শিক্ষক নূর হোসেন বলেন, ‘আসলে প্রশ্নপত্রটি তৈরি করেছেন আমাদের সহকর্মী পপি সাহা। বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হলে আমরা তাকে অনেক বকাঝকা করেছি। তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি এখন অনেক বেশি লজ্জিত।’
ভাতি মাধ্যমিক শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক পারভিন বানু বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা শিক্ষিকা পপি সাহাকে মৌখিকভাবে বলেছি। শিগগিরই আমরা তাকে শোকজ করব।