বর্তমান সময়ে একটি বিশেষ চাকরি পাওয়ার জন্য আমরা প্রায় সবাই উঠেপড়ে লেগেছি। আর সেটি হচ্ছে বিসিএস ক্যাডার। এ যেন আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ, যা পেলে মনে হয় আমাদের সব দুঃখ দূর হয়ে যাবে, জীবনের সব মুশকিল আসান হবে! সমাজে টিকে থাকতে হলে দরকার সম্মান, অর্থ, সামাজিক মর্যাদা, ক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদি। আর এসবের অসীম আকাঙ্ক্ষার জন্যই একজন ছাত্র চায় বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টার পরও পারছে না তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে। ফলে হতাশা গ্রাস করছে অনেককেই। কিন্তু ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’ বিসিএসের পেছনে ছোটা উচিত নয় ছাত্রসমাজের। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে, করপোরেট ওয়ার্ল্ডে। বৈশ্বিক অবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে দরকার সৃজনশীল কিছু করা। শুক্রবার (২ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন হাসান তাসনিম শাওন।
চাকরির প্রতিযোগিতায় ইঁদুর দৌঁড়ের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাগ্রহণে অনাগ্রহ তৈরি হচ্ছে। একটি ছেলে প্রথম বর্ষে এসেই লাইব্রেরিমুখি হয় বিসিএসের জন্য পড়াশোনা করতে। তার কাছে শিক্ষা হয়ে ওঠে চাকরি পাওয়ার মাধ্যম মাত্র। বিসিএস মন্দ বিষয় না। মন্দ বিষয় হলো আমরা শুধু একটি কাঠামোর ওপর অন্ধ হয়ে যাচ্ছি। বিসিএস ছাড়াও যে আরো অনেক কিছু করার আছে সেই ভাবনা ভাবার চেষ্টা করছি না বা সাহস করছি না। এজন্য কর্মমুখি শিক্ষার মাধ্যমে বিসিএসের চাপ কমিয়ে আনা দরকার। দরকার মানসিকতার পরিবর্তন করা। দরকার চাকরিভিত্তিক পড়াশোনার দিকে না ঝুঁকে জীবনভিত্তিক পড়াশোনা করা। যে কোনো পেশাকে সমান শ্রদ্ধা ও সম্মান করা। সবসময় একটা কথা মনে রাখা দরকার—জীবনের জন্য চাকরি, চাকরির জন্য জীবন নয়।
লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।