চাকরি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে - দৈনিকশিক্ষা

চাকরি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি |

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির প্রলোভেন দেখিয়ে বেকার যুবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মেজবাহ উদ্দিন মিয়া। তিনি সখিপুর ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। এই ঘটনা জানাজানি হলে পুরো এলাকাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রাইমারী স্কুলে চাকরি দেয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন মেজবাহ উদ্দিন মিয়া। কিন্ত তাদের কারো চাকরি হয়নি। এখন ঐ টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন তিনি।

তবে ঠিক কতজনের সাথে তিনি এমন চুক্তি করেছিলেন তার সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে দেশের প্রতিটি জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

১ আগষ্ট থেকে শুরু করে ৩০ আগষ্ট পর্যন্ত চলে এ আবেদন প্রক্রিয়া।

এ সময় ভেদরগঞ্জ উপজেলা থেকেও শত শত চাকরিপ্রত্যাশী আবেদন করেন।

শিক্ষক নিয়োগের এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ১নং সখিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেজবাহউদ্দিন মিয়া প্রতারণার জাল ছড়ায়।

ভুক্তভোগীরা জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বস্তন কর্মকর্তা তার আত্মীয় হয় এবং তিনি চাকরি দিতে পারবেন এমন নিশ্চয়তা দেন মেজবাহ।

এভাবে স্থানীয় কয়েকজন যুবককে বোকা বানিয়ে তাদের কাছ থেকে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা উত্তোলন শুরু করেন মেজবাহ।

কিন্তু গত ২৪ ডিসেম্বরে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এসব চাকরিপ্রত্যাশীদের কারো নামই ওঠেনি চূড়ান্ত তালিকায়।

এর পর তারা মেজবাহউদ্দিন মিয়ার কাছে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি গড়িমসি শুরু করেন। পরে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য একাধিক দিন তারিখ দিলেও এখন পর্যন্ত কারো টাকা বুঝিয়ে দেননি এই প্রধান শিক্ষক।

ভুক্তোভোগীদের পরিবারসহ স্থানীয়দের অভিযোগ, চাকরির দালালিসহ বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম করে মেজবাহ উদ্দিন মিয়া সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন। আলিশান বাড়িও নির্মাণ করেছেন তিনি।

সখিপুর ইউনিয়নের মাঝি কান্দি গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ইয়াসিন মিয়া বলেন, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষাসহ চাকরির শতভাগ নিশ্চয়তার কথা বলে মেজবাহ উদ্দিন মাষ্টার আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমার চাকরি হয় নাই। এখন বার বার সময় নিয়েও টাকা দিচ্ছেন না তিনি।

ইয়াসিন মিয়া আরো জানান, তার মতোই গোসাইরহাট থানার এক যুবকের কাছ থেকে প্রধানশিক্ষক মেজবাহ টাকা নিয়েছেন।

বেপারী কান্দির বাসিন্দা মিলন সরকার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দিয়ে মেজবাহউদ্দিন মাস্টার আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চেয়েছিল। তবে পরীক্ষার আগে তাকে ২ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। চাকরি হওয়ার পর বাকি ৩ লাখ টাকা দেয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে স্ট্যাম্প এবং চেকও আছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, চাকরিতো হয়নি এখন টাকাও দিচ্ছে না। যে চেক দিয়েছেন সেই চেক ব্যাংকে জমা দিতে গিয়ে দেখি সেই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই।

সখিপুর ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাব্বির মাদবর বলেন, আমার এক আত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মেজবাহউদ্দিন মাস্টার ২ লাখ টাকা নিয়েছিল। পরে আমি চাপ প্রয়োগ করে খুব কষ্টে সে টাকা তুলে দিয়েছি। শুনেছি আরো অনেকের কাছ থেকেই তিনি টাকা নিয়েছিলেন।

টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে অভিযোগের মেজবাহউদ্দিন মিয়া বলেন, আমি অন্যজনের প্ররোচনায় এ কাজটি করেছিলাম। আগামী বুধবারের মধ্যে আমি সবার টাকা ফেরত দিয়ে দেব। এ নিয়ে আর কথা না বাড়াবাড়ি করতে অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। যদি ভুক্তোভুগীরা আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসে, তবে অবশ্যই তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব তানভীর আল নাসীফ বলেন, আমি বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খোঁজ নিতে বলেছি।

শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, তথ্য প্রমানসহ যদি ভুক্তভোগীরা আমার কাছে আবেদন করেন, তবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029919147491455