চামড়ার বাজারে বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসা-এতিমখানা - Dainikshiksha

চামড়ার বাজারে বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসা-এতিমখানা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে এবারে যা ঘটেছে সেটি অনেকে 'বিপর্যয়ের' সাথে তুলনা করছেন। চামড়ার দাম এতটাই নিম্নগামী হয়েছে যে বিষয়টি অনেকের মাঝে বেশ হতাশা তৈরি করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বেশ তড়িঘড়ি করে ঈদের পরদিনই ঘোষণা দিয়েছে যে কেউ যদি কাঁচা চামড়া রপ্তানি করতে চায় তাহলে তাকে অনুমোদন দেয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দেবার পরদিনই সোমবার ট্যানারি মালিকরা এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি তুলেছেন। বুধবার (১৪ আগস্ট) বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকবর হোসেন।

তারা এটা বলেছেন, সরকার কাঁচা চামড়া সংগ্রহের জন্য যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে দামেই তারা চামড়া কিনবেন।

বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলিয়াসুর রহমান বলেন, "চামড়া কিনি আমরা ১০ দিন পরে। আমরা ট্যানারি মালিকরা লবণ দেয়া চামড়া কিনি। আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফ্যাক্টরি করেছি। কাঁচা চামড়া যদি বিদেশে চইল্যা যায়, আমরাও তো চামড়া পাব না।"

চামড়া রপ্তানির সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে চামড়ার পাইকারি ব্যবসায়ী এবং আড়তদাররা। চামড়া রপ্তানি করতে পারলে তারা লাভবান হবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন অনেকে। কারণ তারা ইতোমধ্যে 'যথেষ্ট কম দামে' ব্যবসায়ীদের কাছে চামড়া বিক্রি করে দিয়েছেন। সুতরাং এখন চামড়ার দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের কোনো লাভ নেই।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাদরাসা ও এতিমখানা
বাংলাদেশের অনেক মাদরাসা এবং এতিমখানা কোরবানির পশুর চামড়ার উপর নির্ভর করে। অনেকে তাদের জবাই করা পশুর চামড়া বিনা মূল্যে মাদরাসা এবং এতিমখানায় দান করে। সে চামড়া বিক্রির মাধ্যমে মাদরাসাগুলো অর্থ উপার্জন করে। এবার চামড়ার দামে নিম্নগামী হওয়ায় মাদরাসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন সরকার রপ্তানির অনুমোদন দিলেও মাদরাসাগুলোর কোনো লাভ হবে না।

পুরনো ঢাকার লালবাগে অবস্থিত একটি মাদরাসার শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এবার তাদের মাদরাসায় প্রায় ২১০০ চামড়া এসেছে। গত বছর চামড়া বিক্রি করে তারা যে পরিমাণ অর্থ পেয়েছিলাম, এবার সেটির অর্ধেকও হবে না।

শাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, "এবার চামড়ার বাজার এতটাই বিপর্যস্ত এবং এতটাই নৈরাজ্য হয়েছে যে মাদরাসাগুলো অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবার। চামড়া সংগ্রহ করতে গিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ যে টাকা খরচ করেছে, সেটা ম্যানেজ করতে পারবে না এই চামড়া বিক্রি করে।"

ঢাকার বাইরে অনেক মাদরাসা কর্তৃপক্ষ চামড়া বিক্রি করতে না পেরে সেগুলো মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে বাধ্য হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

শাখাওয়াত হোসেন বলেন, কাঁচা চামড়া রপ্তানির ঘোষণা যদি ঈদের আগেই নেয়া হতো তাহলে এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতো না।

"মানুষ কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে গরীব এবং অসহায়দের দিয়ে দেয়। এর মানে যত টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর পুরোটাই গরীব এবং অসহায় লোকদের পকেট থেকে গেছে," বলছিলেন শাখাওয়াত হোসেন।

সরকার কী বলছে?
কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকে সেগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলা কিংবা ফেলে দেবার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে বর্ণনা করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, "এটা কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ। দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। লবণ দিয়ে একটা চামড়াকে তিনমাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এটা পঁচে যাবে না বা নষ্ট হবে না"

রপ্তানির সুযোগ দিলে দেশের বাজারে চামড়ার দাম বাড়বে। সেজন্যই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বাণিজ্য সচিব উল্লেখ করেন।

"প্রান্তিক পর্যায়ে যারা উপকারভোগী - মাদরাসা, এতিমখানাগুলো যাতে উপকৃত হয় সে বিষয়টাও আমাদের দেখতে হবে," বলছিলেন বাণিজ্য সচিব।

বাণিজ্য সচিব দাবি করেন, প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া রপ্তানির জন্য অনুমোদন দেবার বিষয়টি ঈদের আগেই তিনি বলেছিলেন।

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033488273620605