চেয়ারম্যানের নিষ্ঠুরতায় এসএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত নাছিমের | পরীক্ষা নিউজ

চেয়ারম্যানের নিষ্ঠুরতায় এসএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত নাছিমের

পাবনার আমিনপুরে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তুলে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সদ্য নির্বাচিত এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, তাকে রড ও হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে হাসপাতালেও যেতে পারছে না নিষ্ঠুরতার

পাবনার আমিনপুরে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তুলে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সদ্য নির্বাচিত এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, তাকে রড ও হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে হাসপাতালেও যেতে পারছে না নিষ্ঠুরতার শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী নাছিম শেখ। সাড়া দিচ্ছে না থানা পুলিশও। এ অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় পঙ্গু হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আছে তার পরিবার। অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বাকি পরীক্ষাগুলো দেওয়া নিয়েও।

জানা গেছে, আমিনপুরের সাগরকান্দীতে গত রোববার রতনগঞ্জ হাইস্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছিল নাছিম। সেখান থেকে তুলে চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে মালঞ্চির মাঠে নিয়ে তাকে পেটানো হয়। নাছিম সাগরকান্দী হাইস্কুলের ছাত্র এবং সিন্দুরী বরুনিয়া গ্রামের মাজেদ শেখের ছেলে। সে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈয়ব শেখের ভাগ্নে।

ভুক্তভোগীর মামা বলেন, তিনি সদ্য অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তার নিজের এবং কর্মী ও সমর্থকদের ওপর নির্যাতন করে আসছেন শাহীন চৌধুরী। 'ষড়যন্ত্র করে' নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আরও নির্মম ও নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছেন তিনি। নির্বাচনে তার সমর্থক হওয়ায় কিছুদিন আগে এক ভ্যানচালককে মারধর করেন শাহীন চৌধুরী ও তার লোকজন। এবার তার ভাগ্নেকে নির্মমভাবে পেটানো হলো। পরীক্ষার হল থেকে বের করে শাহীন চৌধুরী তার বাড়ির কাছে নিয়ে নাছিমকে রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। বাড়িটি অবরুদ্ধ করে রাখায় তাকে হাসপাতালেও নেওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় নাছিমের জীবন নিয়ে তারা শঙ্কায় আছেন। পুলিশকে ফোনে অভিযোগ করলেও তারা সাড়া দিচ্ছে না।

পরীক্ষার্থীর বাবা আবদুল মাজেদ শেখ বলেন, 'স্থানীয় নবীন, লিটনসহ শাহীন চৌধুরীর লোকজন কয়েকদিন আগে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। এ সময় তারা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবি করা টাকা না পেয়ে তারা আমার ছেলেকে পরীক্ষার হল থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়েছে।

শিক্ষার্থী নাছিমকে পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে তুলে নিয়ে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে সাগরকান্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন চৌধুরী বলেন, এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ।

এ ব্যাপারে রতনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল কাদের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নাছিম শেখ নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নবিন নামের এক যুবকসহ পাঁচ-ছয়জন স্কুল ক্যাম্পাসের বাইরে পরীক্ষা শেষে মারধর করে এবং তুলে মাঠের মধ্যে নিয়ে যায়। আমি তাৎক্ষণিক কয়েকজন শিক্ষককে মোটরসাইকেলে করে পাঠিয়ে দিয়ে তাদের অনুসরণ করতে বলি এবং আমি আমিনপুর থানায় ফোন করি। পরে তারা আমাদের তৎপরতা দেখে নাছিমকে ছেড়ে দেয়। ঘটনাস্থল বেড়া উপজেলার মধ্যে হওয়ায় এবং যারা ঘটনা ঘটিয়েছে এবং ভুক্তভোগী সুজানগর উপজেলার বাসিন্দা হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আমিনপুর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, নাছিম নামের কাউকে পেটানোর ঘটনায় কেউ অভিযোগ নিয়ে তার কাছে যায়নি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শাহীন চৌধুরীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

বেড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী বলেন, এই ঘটনা আমি হেডমাস্টারের কাছে শুনেছি এবং আমিনপুর থানার ওসিকে ওই ছেলেকে উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছি। তবে কেউ অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।