সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আ. রহিমের বিরুদ্ধে শত্রুতা করে কৈখালী সিদ্দিকিয়া রাশিদিয়া দাখিল মাদরাসা ও হাজী ছায়রা সামাদ এতিমখানার ১০ হাজার লিটার সুপেয়ী পানি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই মাদরাসার সুপার মো. আব্দুল্যাহ আল মামুন। কৈখালী ইউনিয়ন এলাকার পানি লবনাক্ত হওয়ায় সেখানে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে।
রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদরাসার সুপার বলেন, শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালী বিজিপি সড়কের পাশে কৈখালী সিদ্দিকিয়া রাশিদিয়া দাখিল মাদরাসা ও হাজী ছায়রা সামাদ এতিমখানাসহ বায়তুল আমান জামে মসজিদ অবস্থিত। ওই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এতিম খানায় ২০ জন শিক্ষার্থী থাকেন। ওই এলাকার পানি লবনাক্ত হওয়ায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির জন্য ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে একটি এনজিও মাদরাসায় ১০ হাজার লিটারের দুটি পানির ট্যাংকি দেয়। সুপেয় পানির কোন উৎস না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ওই ট্যাংকিতে পানি ধরে রাখা হয়। কিন্তু কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম গতবছর রমজান মাসে লোকজন নিয়ে একটি পানির ট্যাংকি নষ্ট করে দেন। আরেকটি ট্যাংকির পানি তার দলীয় লোকদের মধ্যে দিয়ে দেয়া হয়। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছিল। এবছরও কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে বৈশখালী গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বর শমসের আলম, জয়খালী গ্রামের রুস্তম চৌকিদার, তারানিপুর গ্রামের আক্তার হোসেন, জয়খালী গ্রামের হোসেন আলী, বৈশখালী গ্রামের মোহর আলী মহাজন, জয়খালী গ্রামের জামির হোসেন, জয়খালী গ্রামের আব্দুর রহিম, রুহুল কুদ্দুস, বৈশখালী গ্রামের সোবহান শেখ, সিরাজুল ইসলাম, শোকর আলী, শফিক গাজী, বৈশখালী গ্রামের মোহর আলীসহ কয়েকজন মাদরাসার ট্যাংকির তালা ভেঙে মজুদ থাকা সমস্ত পানি নিজেরা ভাগ করে নিয়ে যায় এবং ট্যাংকিতে একটি নতুন তালা লাগিয়ে রাখে। যার চাবি চেয়ারম্যান নিজের কাছে রেখে দিয়েছে।
সুপার আরও অভিযোগ করেন, পবিত্র রমজান মাসে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম শত্রুতা করে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মো. আব্দুল বারী ও জমি দাতা মো: আব্দুর সবুরসহ স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম ও তার ক্যাডাররা তাদের মারধর করতে উদ্যাত হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয়। সে সময় আব্দুর রহিম বলে এই এলাকায় যেন তোমাদের আর না দেখি, যদি দেখি তাহলে বস্তায় করে নদী পার করে দেয়া হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম পরিকল্পিকভাবে ওই মাদরাসাটি বন্ধের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এবছর ট্যাংকিতে পানি না থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়বে। তারা ওই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ট্যাংকির চাবি প্রতিষ্ঠানের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ারম্যান আ. রহিমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।