ইরানের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন পরমাণু বিজ্ঞানী মহসেন ফকিরজাদেহ রাজধানী তেহরানের কাছে চোরাগোপ্তা হামলায় নিহত হয়েছেন। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় একথা জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সশস্ত্র ঘাতকরা মহসেনের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
মহসেন ইরানে গোপন পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির হোতা বলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন থেকেই সন্দেহ করে এসেছে। কূটনৈতিকরা তাকে ‘ইরানের বোমার জনক’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ মহসেন হত্যার ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলে নিন্দা করেছেন।
মহসেন ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন সংগঠনের প্রধান ছিলেন
শুক্রবার মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেছে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার গাড়ির ওপর গুলি চালালে তাদের সঙ্গে মহসেনের দেহরক্ষীদের সংঘর্ষ হয়। এতে মহসেন মারাত্মক আহত হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালেও নেওয়া হয়।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, চিকিৎসক দল তাকে বাঁচাতে পারেনি।বছরের পর বছর ধরে নিজের কাজ আর সংগ্রাম চালিয়ে আসা এই বিজ্ঞানী কয়েক মিনিট আগে শহীদ হয়েছেন।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স জানায়,তেহরান থেকে কিছুটা দূরের শহর আবজার্দে বিজ্ঞানী মহসেনের গাড়ির ওপর গুলি চালানোর আগে সন্ত্রাসীরা আরেকটি গাড়ি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছে।
এ হামলার জন্য যে-ই দায়ী হোক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের আগে দিয়ে এমন ঘটনায় ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা নিশ্চিতভাবেই বাড়বে।
মহসেন ফকিরজাদেহ এর খুনিদের ওপর পাল্টা হামলার অঙ্গীকার করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির এক সামরিক উপদেষ্টা ও সেনা কমান্ডার হোসেইন দেগান।
এক টুইটে এই ইরানি কমান্ডার বলেছেন,“এই শহীদের হত্যাকারীদের ওপর আমরা বজ্রাঘাত হানব, যাতে তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য পস্তায়।”
২০১০ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইরানের চার পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ইরান এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০১৮ সালের মে মাসে ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে অভিযোগ করতে গিয়ে মহসেন ফকিরজাদেহ এর নাম বলেছিলেন।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্পগুলোতে মহসেন কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে সে সময় এই নামটি ‘মনে করে রাখতেও’ বলেছিলেন নেতানিয়াহু।