ছাত্রীর লাশ, বসুন্ধরার এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা - দৈনিকশিক্ষা

ছাত্রীর লাশ, বসুন্ধরার এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর গুলশানে কলেজ ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আজ মঙ্গলবার আবেদন করেছে পুলিশ। আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) জাফর হোসেন বলেন, সায়েম সোবহানের দেশত্যাগে পুলিশের করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, কারও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আদালতের অনুমতির প্রয়োজন। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভিবাসন কর্তৃপক্ষকেও সায়েম সোবহান যাতে দেশ ছাড়তে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামে এক ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহানকে মামলায় আসামি করা হয়।

এই মামলায় পুলিশ সায়েম সোবহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানা গেছে। ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে সায়েম সোবহানের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগে চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালে মোসারাতকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে আসামি রাজধানীর বনানীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। সেখানে তাঁরা বসবাস করতে শুরু করেন। ২০২০ সালে আসামির পরিবার এক নারীর মাধ্যমে এই প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারে। এরপর আসামির মা মোসারাতকে ডেকে ভয়ভীতি দেখান এবং তাঁকে ঢাকা থেকে চলে যেতে বলেন। আসামি কৌশলে তাঁর (বাদী নুসরাতের) বোনকে কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেন এবং পরে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, সবশেষ গত ১ মার্চ মোসারাতকে প্ররোচিত করেন আসামি। তিনি বাসা ভাড়া নিতে বাদী নুসরাত ও তাঁর স্বামীর পরিচয়পত্র নেন। ফুসলিয়ে তিনি মোসারাতকে ঢাকায় আনেন। তিনি গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে বাসা (ফ্ল্যাট-বি-৩) ভাড়া নেন। ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে আসামি ও তাঁর (বাদীর) বোনের স্বামী-স্ত্রীর মতো ছবি তুলে তা বাঁধিয়ে রাখা হয়। আসামি বাসায় এলে কক্ষটি পরিপাটি করে রাখা হতো।

বাদী নুসরাত এজাহারে বলেন, বোনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তাঁকে বিয়ে করে বিদেশে স্থায়ী হবেন। কারণ, দেশে থাকলে আসামির মা–বাবা আসামিকে কিছু না করলেও তাঁর বোনকে মেরে ফেলবেন। গত ১ মার্চ থেকে আসামি মাঝেমধ্যে ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন।

বাদী এজাহারে বলেন, ২৩ এপ্রিল মোসারাত তাঁকে ফোন করেন। মোসারাত তাঁকে বলেছেন, আনভীর তাঁকে বকা দিয়ে বলেছেন, কেন তিনি (মোসারাত) ফ্ল্যাটের মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছেন, ছবি তুলেছেন। ফ্ল্যাটের মালিকের স্ত্রী ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন। এ ছবি ‌পিয়াসা দেখেছেন। পিয়াসা মালিকের স্ত্রীর ফেসবুক বন্ধু। এখন পিয়াসা তাঁর মাকে সবকিছু জানিয়ে দেবেন। তিনি (আসামি) দুবাই যাচ্ছেন, মোসারাত যেন কুমিল্লায় চলে যান। আসামির মা জানতে পারলে তাঁকে (মোসারাত) মেরে ফেলবেন। 

এজাহারে নুসরাত বলেন, দুদিন পর ২৫ এপ্রিল মোসারাত তাঁকে ফোন করেন। ওই সময় তিনি কান্নাকাটি করে বলেন, আনভীর তাঁকে বিয়ে করবেন না, শুধু ভোগ করেছেন। আসামিকে উদ্ধৃত করে মোসারাত বলেন, আসামি তাঁকে বলেছেন, তিনি (মোসারাত) তাঁর শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মোসারাতকে তিনি ছাড়বেন না। মোসারাত চিৎকার করে বলেন, আসামি তাঁকে ধোঁকা দিয়েছেন। যেকোনো সময় তাঁর বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাঁরা (বাদী নুসরাতের পরিবার) যেন দ্রুত ঢাকায় আসেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, নুসরাত তাঁর আত্মীয়স্বজন নিয়ে বেলা দুইটার দিকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় রওনা দেন। আসার পথে বারবার মোসারাতের ফোনে ফোন করেন, কিন্তু তিনি আর ফোন ধরেননি। গুলশানের বাসায় পৌঁছে দরজায় নক করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে নিচে নেমে আসেন। তাঁরা নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষ থেকে বাসার ইন্টারকমে ফোন করেন। পরে ফ্ল্যাটের মালিকের নম্বরে ফোন দিলে মিস্ত্রি এনে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকার পরামর্শ দেন। মিস্ত্রি ডেকে তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর তিনি দেখেন, তাঁর বোন ওড়না পেঁচিয়ে শোয়ার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলে আছেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ এসে ওড়না কেটে মোসারাতের মৃতদেহ নামায়। আলামত হিসেবে আসামির সঙ্গে ছবি, আসামির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে লেখা ডায়েরি ও তাঁর ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্র বলছে, আসামির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় ২৬ এপ্রিল বেলা ১১টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টার মধ্যে যেকোনো সময় মোসারাত মারা যান।

বাদী নুসরাত মামলার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037539005279541