রাজশাহীতে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র ও তার মাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। আহতরা হলেন-মিনহাজ উদ্দিন অনিক ও তার মা জাফরিন সুলতানা জলি। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম রাকিব উদ্দিন। তিনি মহানগরীর ভদ্রা চকপাড়ায় অক্ষর একাডেমি স্কুলের পরিচালক। শুক্রবার সকালে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে কয়েকজন শিক্ষকের হামলায় আহত হয়েছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উমরুল হক। বৃহস্পতিবার বিকালে অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে কয়েকজন শিক্ষক তাকে মারধর করেন। আহত উমরুল হককে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার উত্তরচকপাড়া এলাকার আলমগীর কবির সুমনের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন অনিক অক্ষর একাডেমি থেকে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বুধবার দুপুরে অনিক শিক্ষক রাকিব উদ্দিনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। এ সময় তার মোবাইল ফোনে একটি এসএমএস আসে। এ নিয়ে শিক্ষক রাকিব উদ্দিন তাকে বকাবকি শুরু করেন। জানতে চান- ফোন কেন সঙ্গে এনেছে। একপর্যায়ে শিক্ষক রাকিব লাঠি দিয়ে অনিককে বেধড়ক পেটান। এ সময় অনিক ফোন দিয়ে তার মা জাফরিন সুলতানা জলিকে ডাকে। জলি ঘটনাস্থলে এলে তাকেও শিক্ষক রাকিব চুল ধরে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
শিক্ষার্থী অনিকের মা জলি বলেন, আমার ছেলেকে লাঠি দিয়ে শরীরের প্রত্যেকটি জায়গায় পেটানো হয়েছে। আমার শরীরেও আঘাত করা হয়েছে। আমরা বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতাল থেকে ফিরেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষক রাকিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে শিক্ষক রাকিব উদ্দিন বলেন, আমি অনিককে শাসন করেছি। আর তার মা খারাপ আচরণ করায় রাগ সামলাতে না পেরে কয়েকটি চড়থাপ্পড় মেরেছি। এটি ঠিক হয়নি।
চন্দ্রিমা থানার ওসি এমরান হোসেন বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোদাগাড়ীতে কলেজ অধ্যক্ষকে মারধর : এদিকে কী নিয়ে গোদাগাড়ী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উমরুল হকের ওপর হামলা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে যেসব শিক্ষক অধ্যক্ষ উমরুল হককে পিটিয়েছেন তারাই ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট তৎকালীন অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের ওপর হামলা করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। সাবেক অধ্যক্ষকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। হামলাকারী হান্নান হোসাইন ও মামুনসহ অন্যরা জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গোদাগাড়ী কলেজের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক হান্নান হোসাইনের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকেন। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা অধ্যক্ষকে চড়থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। হামলাকারীরা তাকে মাটিতে ফেলে বেপরোয়া লাথি মারতে মারতে রক্তাক্ত করেন। এরপর তাকে কক্ষের ভেতরে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেন। পরে অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরা দরজা ভেঙে অধ্যক্ষ উমরুল হককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষের ওপর হামলার কথা শুনেছি। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।