যশোরের মনিরামপুরে মোটরসাইকেল ছিনতাইকারী সন্দেহে বোরহানুল কবির নামে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার খালিয়া রাস্তার মোড়ে বোরহান মারধরের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক বোরহানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত বোরহানুল কবির পৌর শহরের মোহনপুর এলাকার আহসানুল কবিরের ছেলে। তিনি মনিরামপুর সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বোরহান শনিবার সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে মনিরামপুর পৌর শহরে একটি কোচিং সেন্টারে পড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরে কোচিং সেন্টারের একজন শিক্ষকের কাছ থেকে বাইসাইকেল নিয়ে উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকায় যান। দুপুর ১২টার দিকে রাজগঞ্জ-হেলাঞ্চি সড়কের খালিয়া গ্রামের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন বোরহান। সেখানে মোটরসাইকেলসহ উপস্থিত ছিলেন কৃষ্ণবাটি গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে নাইম হোসেনসহ অপর এক যুবক। বোরহান রাস্তার পাশে বাইসাইকেলটি রেখে নাইমকে অনুরোধ করেন তাকে মোটরসাইকেলে নিয়ে যেতে। নাইম অপারগতা প্রকাশ করলে জোর করে মোটরসাইকেলে ওঠার চেষ্টা করেন বোরহান। তখন নাইম ও তার সঙ্গে থাকা যুবক তাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারী বলে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে বোরহানকে বেধড়ক পেটায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যান।
তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহাজান আলী জানান, খবর পেয়ে বোরহানের অভিভাবকরা দুপুর ২টার দিকে তদন্ত কেন্দ্র থেকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে নেওয়া হয় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার রাতেই ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক বোরহানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, রাতেই মোটরসাইকেলসহ প্রধান আসামি নাইম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বোরহানুল হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ঝাপা ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শামছুল হক মন্টুকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেলে পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে থানা ঘেরাও করেন তারা। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন পৌর কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা বাবুল আকতার।
কয়েকশ শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী বিকেল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী থানা ঘেরাও করে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তারা আওয়ামী লীগ নেতা মন্টুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল আকতার বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে এলাকাবাসীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।