জঙ্গীবাদে জড়িত হয়ে গ্রেফতার হওয়া বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক মো. মোতাহার হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক পদে কর্মরত ছিলেন। একইসাথে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। গতবছরের মার্চ মাসে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় দায়ের হওয়া সন্ত্রাসী বিরোধী মামলায় তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। গ্রেফতার হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে তাকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হয়েছে।
তবে, শিক্ষা ক্যাডারের আরেক কর্মকর্তা শাহেদুল খবির চৌধুরী রাজধানীর একটি হোটেলের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কয়েকবছর আগে। সেই গুলিবিদ্ধ হওয়ার রহস্য আজও জানা যায়নি। পুলিশের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের খবর নেই আজও। এছাড়া যশোরের দুইজন নারী শিক্ষা ক্যাডারে কর্মকর্তা আইএসে যোগ দেয়ার জন্য সিরিয়া গিয়েছিলেন। তাদেরও খবর নেই।
এছাড়া ৩০ মার্চ রাতে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মুসলিম সরদার। তিনি হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজে কর্মরত ছিলেন। তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসের মাঝামাঝি রাজধানীর দারুস সালাম ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। তাদের মধ্যে, রাজধানীর দারুসসালাম থেকে মো. মোতাহার হোসেন ওরফে জামিল হাসান, মো. মুরশিদুল আলম ওরফে শিহাদ ওরফে মুরশিদকে এবং সিলেট থেকে সাইফুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৪-এর একটি দল গত ১৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১৯ মার্চ রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ওই তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের অর্থ শাখার সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দেয়। তাদের কাছ থেকে সংগঠনের বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেট, ডিজিটাল কনটেন্টসহ মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের আদেশে জানা গেছে, নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক মো. মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মার্চ রাজধানী দারুসসালাম থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা হয়। পরে, গত বছরের ২৪ মার্চ থেকে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন বলে জানা গেছে। তাই, বিদ্যমান সরকারি চাকরি আইন অনুসারে প্রভাষক মো. মোতাহার হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ মার্চ আটক হওয়ার দিন থেকে তার সাময়িক বরখাস্ত কার্যকর হবে।
শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার জঙ্গী সম্পৃক্ততা নিয়ে মন্তব্য জানতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৩৯ (২) ধারায় গ্রেফতার হওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করার বিধান আছে। যদিও এ বিধান সবার জন্য প্রযোজ্য হয়না। গ্রেফতার হওয়ার পরেও বরখাস্ত করা হননা অনেক কর্মকর্তাদের। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে স্ত্রীর করা মামলায় জেলে গিয়েছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা শাখার উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান। কিন্তু তাকে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। অপরদিকে গ্রেফতার হওয়ার কয়েকবছর পরেও শিক্ষকদের বরখাস্ত করার নজির আছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।