জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্রে প্রমিত বানান উপেক্ষিত | মতামত নিউজ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্রে প্রমিত বানান উপেক্ষিত

আমরা প্রায় সবাই কোনো না কোনো কাজে আছি। কর্মক্ষেত্র না লিখে উপায় নেই। সবাইকেই কম-বেশি লিখতে হয়। কিন্তু প্রায়ই লেখার ক্ষেত্রে বানান বিভ্রাট, অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা লক্ষণীয়, যৌক্তিক বানানরীতি উপেক্ষিত।

আমরা প্রায় সবাই কোনো না কোনো কাজে আছি। কর্মক্ষেত্র না লিখে উপায় নেই। সবাইকেই কম-বেশি লিখতে হয়। কিন্তু প্রায়ই লেখার ক্ষেত্রে বানান বিভ্রাট, অরাজকতা বা বিশৃঙ্খলা লক্ষণীয়, যৌক্তিক বানানরীতি উপেক্ষিত। এমনই দুর্ভাগ্য যে পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী, গবেষণাপত্র, বই-পুস্তক, রাজনৈতিক প্রচারপত্র, কী দেয়াল-লিখন, টেলিভিশন, দোকানের নামফলক, কী বিজ্ঞাপনে বানান ভুল দেখতে দেখতে বিষয়টি এতই গা সহা হয়ে গেছে যে—অনেক সময় শুদ্ধ বানানই মনে হয় ভুল আর ভুলটাই মনে হয় শুদ্ধ। শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে আরও জানা যায়, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, আমরা ভুল লিখতে ও বলতে লজ্জিত তো হই-ই না, এমনকি কৈফিয়তও দেই এমনভাবে যে, লিখলেই হলো—আজকাল সব বানানই চলে। মাতৃভাষার প্রতি এমন নির্লজ্জ ও শ্রদ্ধাহীন উক্তি আর হতে পারে না। জাতি হিসেবে আমরা আমাদের ভাষা নিয়ে অহংকার যেমন করি, অবজ্ঞা করি তার চেয়েও বেশি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের সিলেবাসে প্রমিত বানান নিয়ম আছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে সেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাস দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা সারা দেশে শুরু হয়েছে। পরীক্ষার উত্তরপত্রে কভারের প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে— সীলমোহর, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর, ইংরেজিতে। প্রমিত বানানরীতির নিয়মানুসারে বিদেশি শব্দে ঈ (ী)- কার হয় না, হয় না মূর্ধন্য (ষ)। হবে ই ()ি-কার এবং দন্ত্য (স)। বাংলা বানানরীতির নিয়মানুসারে ভাষার নামের শেষে ঈ ( ী)- কার হয় না, হবে ই ()ি-কার। শব্দগুলোর প্রমিত বানান হবে—সিলমোহর, রেজিস্ট্রেশন ও ইংরেজিতে। কভার পৃষ্ঠার শেষের পাতায় ‘পরীক্ষার্থীর জন্য নিদের্শনাবলীতে’ লেখা আছে বহিস্কার। শব্দটির সঠিক বানান হবে বহিষ্কার। কভার পৃষ্ঠার প্রথম পাতায় বিশেষ দ্রষ্টব্য ও প্রধান-এর সংক্ষিপ্তকরণের জন্য যতি চিহ্ন (:) কোলন ব্যবহার করে লেখা হয়েছে— বি: দ্র:, প্র:। সংক্ষিপ্তকরণের জন্য বিন্দু (.) ব্যবহার করার নিয়ম। তাই শব্দগুলোর সংক্ষিপ্তকরণ হবে— বি. দ্র., প্র.।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান—যাদের সিলেবাসে প্রমিত বানানরীতি আছে। তাদের কাজে প্রমিত বানানরীতি উপেক্ষিত হলে তা খুবই দুঃখজনক। আশা করি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সর্বক্ষেত্রে প্রমিত বানান লিখতে আরো দায়িত্বশীল হবে।

লেখক : জহুরুল হক বুলবুল, সহকারী অধ্যাপক, কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজ, কালিহাতী, টাঙ্গাইল