জাবিতে আন্দোলনকারীদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ - দৈনিকশিক্ষা

জাবিতে আন্দোলনকারীদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বাসভবনের সামনে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংহতি সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে অবস্থান নেন তারা। উপাচার্যের বাসভবন ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা পুলিশের সামনেই অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। 

শিক্ষার্থীদেরকে হল ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, অধিকাংশ হল খালি হয়ে গেছে। হলগুলোতে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে। এরপরও সিন্ডিকেটের নির্দেশ অমান্য করে যদি কেউ হলে অবস্থান করে তবে এরজন্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে না।

তিনি আরও বলেন, কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ হোক আমরা তা চাই না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক। আজীবন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে না। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে  তারা ফিরে আসুক। সিন্ডিকেটের নির্দেশ অমান্য করলে প্রয়োজনে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে সব হল ছেড়ে শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। রায়হান রাইন বলেন, কোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শিক্ষকরা আক্রমণ করেছেন এমন নজির নেই। গতকাল প্রক্টর ছিলেন। পুলিশ ছিল। শিক্ষকরাও ছিলেন। সবার চোখের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। তারা নীরব ভূমিকা পালন করেছে। তারা উল্টো উস্কানি দিয়েছে। শিক্ষক সমতির সভাপতিও সেখানে ছিলেন। উপাচার্য নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এই নিরাপত্তাহীনতা কে তৈরি করেছে? প্রশাসন করেছে। দুর্নীতিবাজ উপাচার্য ফারজানা করেছে। তাকে এই ক্যাম্পাসে কোনোভাবেই রাখা যাবে না। তাকে অপসারিত হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প চলছে সেই মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য হলেও তাকে সরে যেতে হবে।

এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরমধ্যে হল না ছাড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়। দুপুর ২টার দিকে হল প্রভোস্ট কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ এই তথ্য জানান।

বুধবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের পাশে মুরাদ চত্বরে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দেন আন্দোলনরত-শিক্ষার্থীরা। পরে ভবনটির ফটক আটকে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে হল ছাড়ার নির্দেশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি এক সভা শেষে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রথমে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশের কথা জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিকাল সাড়ে ৫টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশের পর শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে শুরু করলেও অনেকেই থেকে যান এবং গভীর রাত পর্যন্ত আন্দোলনে অংশ নেন। পরে বুধবার সকাল থেকে আবার আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

আজ থেকে হল সংলগ্ন খাবার দোকানগুলো বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অধ্যাপক বশির।

উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে প্রায় তিনমাস ধরে আন্দোলন চলছে। অক্টোবরের শেষ থেকে আন্দোলনকারীরা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ এবং সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করছিলেন। ফলে কার্যালয়ে যেতে পারছিলেন না উপাচার্য। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আট শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এই হামলার পর দুপুর ১টার দিকে পুলিশ, জাবি শাখা ছাত্রলীগ, প্রশাসনপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের কড়া পাহারায় নিজ গাড়িতে করে বাসভবন থেকে বের হন উপাচার্য। পরে সেখান থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।  উপাচার্য তাকে মুক্ত করার জন্য ছাত্রলীগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ - dainik shiksha বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042009353637695