জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির পদ ত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। যারা শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত করার জন্য এমন হীন কার্যক্রম করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার (০৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করবে এবং মিথ্যা অভিযোগ দেবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন আমাদের প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে। কে কোথায় কার কাছ থেকো অর্থ সহযোগিতা নেওয়ার পায়তারা করেছে সেগুলো আমরা জানতে পারি। কিন্তু অনেক সময় জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কথা চিন্তা করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় বলা আছে মিথ্যা অভিযোগ করলে দণ্ড পেতে হবে।
উপমন্ত্রী বলেন, আমরা অভিযোগকারীদের কাছে তথ্য উপাত্ত চাওয়ার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক ঘণ্টার পথে অভিযোগ নিয়ে আসতে তাদের চারদিন কেন লেগেছে? স্বাভাবিক কারণেই মনে হয়েছে এ দেরিটা দুরভিসন্ধিমূলক। অভিযোগ থাকবে, সেটা জমা হলে তদন্ত হবে। ন্যায় বিচারের জন্য উভয় পক্ষের শুনানির প্রয়োজন আছে। কিন্তু তার আগেই গান-বাজনা-কনসার্ট ঘোষণা দেওয়া, গভীর রাতে তালা ভাঙা, তালা লাগানো। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পরও ক্যাম্পাস ত্যাগ না করে কি উদ্দেশ্যে সারারাত অবস্থান করা হচ্ছে? সেটা জানতে চাই।
তিনি বলেন, তদন্ত করার জন্য অভিযোগ জমা দেওয়ার আগে কনসার্টের অর্থ কোথা থেকে এলো সেটাও তদন্তে রাখবো।
উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, দুঃখের বিষয় জনগণের অর্থে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে শিক্ষাবর্ষ নষ্ট ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে শঙ্কায় ফেলে অপচেষ্টা হচ্ছে।
অনেকে দূর থেকে এ আন্দোলনকে ইন্ধন দিচ্ছে জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু রাজনৈতিক দল যারা মাঠের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান জনগণের মধ্যে আস্থা আনতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমরাও সহযোগিতা করেছি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। তথাপি দেখা যাচ্ছে একটি পক্ষ সেখানে কনসার্ট আয়োজনের নামে, প্রতিদিন তালা ভাঙা, তালা দেওয়ার মতো অরাজকতা করছে। এ আন্দোলনকারীরা কিছুদিন আগে বলছিলেন আচার্যের যে সাচিবীক দায়িত্ব পালন করেন সে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তথ্য উপাত্ত পেশ করবেন। পরে দেখা গেলো সেগুলো উপস্থাপন না করে পরিস্থিতি জটিল করতে গভীর রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে একটি অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করলেন। উপাচার্য একজন নারী তার পরিবারের সবাইকে অবরুদ্ধ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, যারা এ দাবি নিয়ে মাঠে আছেন তাদের আবারও বলছি যে আপনারা যদি মনে করেন দাবির ভিত্তি আছে তাহলে সেটা নিয়ে না এসে শুধু ভিসির পদত্যাগকে মূখ্য কেন করছেন। ভিসির পদত্যাগের মাধ্যমেই কি সব জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে?