জীবনমুখী শিক্ষা ও প্রাসঙ্গিকতা - দৈনিকশিক্ষা

জীবনমুখী শিক্ষা ও প্রাসঙ্গিকতা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মানবজীবনে 'শিক্ষা' নিয়ে আমাদের ভাবনা শৈশব থেকেই শুরু। জন্মের পর নিষ্পাপ সন্তানের পবিত্র মুখের নরম পরশে, অনাবিল আনন্দ ও গভীর স্বপ্নের ছোঁয়ায় পুলকিত হয় মা-বাবার মন ও হৃদয়। সন্তানকে মানুষ করতে হবে, শিক্ষিত করতে হবে- শুরু হয় শেখার ও শিক্ষার প্রথম চৌকাঠে শিশুর পদচারণা। শিক্ষার এই দুরন্ত স্রোতে কেউবা তীরে পৌঁছায়, কেউবা হারিয়ে যায় অতলে। হতাশা, ক্লান্তি, না পাওয়ার বেদনা গ্রাস করে। কিন্তু জীবনমুখী শিক্ষা নিয়ে আমরা যদি একটু ভাবি এবং আমাদের আগামী প্রজন্মকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি জীবনমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারি, সাফল্য এবং সার্থকতার স্পর্শ তারা পাবেই। শুধু কিছু তত্ত্ব ও বিষয়-নির্ভর জ্ঞানচর্চা না করে এর পাশাপাশি আপনার জীবনকে সুন্দর ও শান্তিময় করার জন্য যে নৈতিক ও বাস্তব জ্ঞান দরকার, সেগুলো জানতে হবে। মনে করুন, আপনার পাশে কেউ নেই এবং আপনি একা একটি সমস্যার সমাধান করছেন। আপনি যদি সমস্যাটি সমাধানের চেয়ে আপনার পাশে কেউ নেই, আপনি একা, আপনার আরও কিছু ব্যক্তিগত প্রতিবন্ধকতা এসব নিয়ে ভাবতে থাকেন এবং অসহায়বোধ করেন, তাহলে আপনার আসল সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে পেতে বিলম্ব হবেই। আর তাই বিপদে স্থির থেকে বিপদমুক্ত হওয়ার কৌশল জানা জীবনের জন্য প্রয়োজন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, আজকাল অনেক তরুণ-তরুণীকে দেখি, সব বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে লিখে থাকেন এবং জ্ঞানচর্চা করেন। ওই সময়ের কিছুটা নিয়ে আপনার মেধা ও ধীশক্তি দিয়ে কম্পিউটার দক্ষতা, ভাষা দক্ষতা, উপস্থাপনা দক্ষতা, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, ধর্ম, জীবন, সংস্কৃতি, ইতিহাস, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভাবেন ও লেখাপড়া করেন কাজে লাগবে। এছাড়া আপনি যখন ভালো চাকরির জন্য ছুটছেন বা সংসার জীবনে প্রবেশ করছেন, আপনার বৈষয়িক শিক্ষার পাশাপাশি এই শিক্ষাগুলো বন্ধুর মতো উপকারে লাগবে। ছোটবেলায় একটি কথা শুনতাম, পড়ার বিকল্প নেই। অস্থিরতা ঝেড়ে ফেলুন। আজকাল অনেককেই অস্থির দেখি। মনে হয়, আজই যেন যাবতীয় চাওয়া-পাওয়ার শেষ দিন। জীবন মাঝেমধ্যে অনিশ্চিত আয়না। আজ যা সুন্দর, কাল তা সুন্দর মনে হয় না। তাই ছোট ছোট প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি নিয়ে বেশি উচ্ছ্বাস অথবা কষ্ট না দেখানোই ভালো। সেই সঙ্গে সময়, অর্থ ও শক্তি কোনোটি অন্যায় কাজে অপচয় করা সমীচীন নয়। ভাবুন তো, একদিন ভালো কাজে আপনি সেগুলোর অভাববোধ করলেন। যে মা-বাবা নিজেদের অনেক শখ মনের গোপনে রেখে মুখে কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে আপনার লেখাপড়ার অর্থ জুগিয়েছেন, তাদের প্রতি আপনার কর্তব্য আছে। সমাজের প্রতিটি মানুষের প্রতি আপনার দায়িত্ব আছে। সেই গভীর চিন্তা আপনার ব্যক্তিত্বকে শালীন করবে।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও শ্রদ্ধা করতে হবে। তারা কতটুকু দিলেন, কী করলেন, এটা নিয়ে না ভেবে আপনি তাদের কতটা ভদ্রতা, কৃতজ্ঞতা ও ভালো ফলাফল দিতে পারছেন, এটা নিয়ে ভাবুন। মনে রাখবেন, প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শেষ হলেও প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্তব্য শেষ হয় না। প্রতিষ্ঠান আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে প্রাণ পায়। সমালোচনা আজকাল অনেক বেড়ে গেছে। এটা সত্যি যে, শুধু সমালোচনা সমাধান না এনে মাঝেমধ্যে সমস্যা বাড়ায়, সঠিক আলোচনার গতিপথ হারায়। দেশ ও সমাজে শান্তি নষ্ট হয়। মন দ্বিধাগ্রস্ত হয়। তাই আপনি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোর সময় বৃথা সমালোচনার মধ্যে না হয় একটু কম সময় ব্যয় করলেন। এতে ভালোই হবে। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল আপনার জীবনের জন্য একান্ত জরুরি; তবে শেষ অবলম্বন নয়। মনোবল রাখুন, বিশ্বাসী হন। ভালো কাজের ফল ধীরে এলেও আসে। জীবনকে তাই মাঝেমধ্যে বহুর মধ্যে স্বতন্ত্র করে আত্মপ্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত রাখুন। একদিন বহুর মধ্যে একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে আপনার নামই আসবে। আশাবাদী হোন। জানবেন, আপনার বারবার আঘাতে পাথরটি না ভাঙলেও শেষ আঘাতে ভাঙবেই।

ড. প্রতিভা রানী কর্মকার : সহযোগী অধ্যাপক ও পরিচালক আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035421848297119