জুনের মধ্যে কোটা পুনর্বহালের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি শিক্ষার্থীদের - দৈনিকশিক্ষা

জুনের মধ্যে কোটা পুনর্বহালের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি শিক্ষার্থীদের

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: ‘বৈষম্যেরই আরেক নাম কোটা। কোটার মাধ্যমে মেধাবীরা তার যোগ্য আসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’ এমন দাবিই করছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা স্বাধীনতা চেতনাবিরোধী বলেও দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ ইস্যুতে কোনো ছাড় নয় বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে দেশের প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে রাজপথে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা। 
সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ইস্যুতে রোববার (৯ জুন) সকালে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

এর আগে সকালে কোটা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। 

বিক্ষোভ মিছিলে হাজারো শিক্ষার্থীদের জড়ো হয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে ‘চাকরিতে কোটা, মানি না মানবো না’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়/স্বাধীনতার বাংলায়, কোটার ঠাই নাই’, ‘হাইকোর্টের রায়, মানি না মানবো না’, ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা, মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা সুযোগের সমতা’,  ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’,  ‘একাত্তরের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। 

এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে হাইকোর্টের রায় বাতিল করতে হবে। অন্যথায় সারা দেশের প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

তারা বলেন, আমরা সংবিধানের বাহিরে যেতে পারি না। সংবিধান চাকরিতে সুযোগের সমতার নিশ্চিত করেছে। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা প্রকৃত মেধাবীদের হাতে দেশকে তুলে দিন। তারাই দেশের উন্নতির পথ খুঁজে নেবে। ২০১৮ তে আমাদের ছাত্র ভাইয়েরা বুকের রক্ত দিয়ে কোটা প্রথা নামক অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছিলো।

সুযোগের সমতা নিশ্চিত না করলে ছাত্ররা রাজপথের মাটিকে আকড়ে ধরবো। 

ঢাবি শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, আমি নারী হয়ে বলছি আমি নারী কোটা চাই না। আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। মেধাবীরা যোগ্যতার বলে চাকরি পাবে। প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে যে রায় দিয়েছে তা আমরা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন রিহাম বলেন, আমরা হাইকোর্টের রায়কে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করছি। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, কোটা প্রথা বিদ্যমান রাখার জন্য কিন্তু আমরা বলতে চাই উনি কি সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষামন্ত্রী নাকি ২ শতাংশ শিক্ষার্থীর মন্ত্রী?

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আমরা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে জয়ী হয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোটা সংসদে বাতিল

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন

করেছিলেন৷ কিন্তু হাইকোর্টের নেয়া এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে। মেধার ভিত্তিতে দেশ গড়ার স্বপ্নকে ধুলিষ্যাৎ করেছে। সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভঙ্গ করেছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সাম্য গড়েছিলো তা ভেঙে দিয়েছে। 

আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, এই দেশে দীর্ঘদিন ধরে কোটা নামক একটা বৈষম্য চলে আসছিলো। যেই বৈষম্য যেই প্রহসন এদেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্র সমাজের জন্য হয়ে উঠেছিলো অভিশাপ। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আমার ভাইয়েরা রক্ত দিয়ে সেই বৈষম্য থেকে ছাত্র সমাজকে মুক্তি দিয়েছিলেন। আমাদের ভাইয়েরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে যেই অধিকার আদায় করেছিল সে ছয় বছর পর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে এসে হাইকোর্ট তার কলমের খোঁচায় আবার সেই বৈষম্যকে পুনবার্সন করতে চাচ্ছে। অবিলম্বে হাইকোর্টের এ রায় প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে ছাত্রসমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। ছাত্র-জনতা মৃত্যু হওয়ার আগ পর্যন্ত রাজপথে মাটি আঁকড়ে থাকবো আমরা। আমি আহ্বান জানাবো অবিলম্বে আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ছাত্র সমাজকে মুক্তি দেয়া হোক, মেধাবীদের মুক্তি দেয়া হোক।

উল্লেখ্য, সরকারি নিয়োগের দুই শ্রেণিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিলো, সম্প্রতি সেটি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত। এর প্রতিবাদ করছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : আরেফিন সিদ্দিক - dainik shiksha দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : আরেফিন সিদ্দিক এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এতো ফেল! - dainik shiksha কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এতো ফেল! বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ - dainik shiksha বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065770149230957