জেএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি Composition (কম্পোজিশন) ও Completing story Rearrange (কমপ্লিটিং স্টোরি রিঅ্যারেঞ্জ) উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এতে ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ার চাপ অন্তত অর্ধেক কমে গেছে। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী গ্রামে লেখাপড়া করে এবং তাদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী Composition মুখস্থ করতে পারে না বা মনে রাখতে পারে না। ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী যদিও বা এগুলো অনেক কষ্ট করে মুখস্থ করে বা শিখে থাকে, সেগুলো মনে রাখতে এবং পরীক্ষার খাতায় না দেখে লিখতে গিয়ে প্রচুর সময় ব্যয় করে এবং ব্রেনের ওপর চাপ অনুভব করে।
মেধাবী শিক্ষার্থীরা কত কষ্ট করে এগুলো আমাদের সামনে বলে, সেটা তাদের চেহারায় ফুটে ওঠে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এগুলো তারা না বুঝেই তোতাপাখির মতো মুখস্থ করে থাকে। অথচ এগুলোর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের কোনো মিল বা উপকার হয় না।
তবে এটা স্বীকার করতেই হবে- এগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের Vocabulary (ভোকাবুলারি) বৃদ্ধি পায় এবং Reading (রিডিং) দক্ষতা বাড়ে।
আসলে বাংলাদেশ টেক্সটবুক বোর্ড প্রকাশিত ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি প্রথমপত্রের বইগুলো শিক্ষার্থীরা ভালো করে পড়লে তারা ইংরেজিতে কথা বলা বা লেখার দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
ইংরেজি গ্রামারের নিয়ম যেসব শিক্ষার্থীর জানা থাকে, পরীক্ষার আগের দিন তাদের সেগুলো Revision (রিভিশন)-এর দরকার হয় না।
বড় বড় শহরের ভালো কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে বাকিগুলোর অবস্থা গ্রামের স্কুলগুলোর মতোই। এবার আসা যাক, জেএসসি পরীক্ষার সুফল নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে অবহিত হওয়া প্রসঙ্গে- ১. ভালো শিক্ষার্থীরা জেএসসি পরীক্ষার জন্য যেভাবে Preparation বা প্রস্তুতি নিয়ে থাকে, তাতে তাদের এসএসসি পরীক্ষার পড়াও আংশিকভাবে সম্পন্ন হয়ে যায় ২. পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীদের সাহস ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। ৩. এলাকার হোমরা-চোমরারা কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে যখন-তখন বলার সুযোগ পায় না ‘অমুককে অষ্টম শ্রেণি পাস একটি সার্টিফিকেট দেন।’
পরীক্ষা সংক্রান্ত সরকারি কিছু টাকা শিক্ষকদের পকেটে আসে ডিউটি ভাতা হিসেবে। পরীক্ষা চলাকালে কিছু কিছু কেন্দ্রে বেঞ্চ টানাটানি করার জন্য কিছু শ্রমিক ঠিক করা হয়, যারা স্বল্প সময়ের জন্য হলেও কাজের মাধ্যমে কিছু পয়সা রোজগার করতে পারে।
তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিইসি/জেএসসি বা এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সেসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার পাঁচ-ছয় মাসে আগেই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হিসাব করে পর্যাপ্ত বেঞ্চ নিশ্চিত করা দরকার। মূলত সরকারি কোনো কাজ অপরিকল্পিতভাবে করা হলে বা পরিকল্পনায় ভুল হলে অর্থ গচ্চা যায়।
পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এটি বলার সুযোগ নেই। কাজেই অর্থ অপচয়ের ধুয়া তুলে যারা পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বন্ধের পক্ষে কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশে বলব- পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ নয়, বরং আরও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে যাতে নেয়া যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
অপ্রিয় হলেও সত্য- জেএসসি পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই Rearrange Completing story এবং Composition নকল করে লেখার চেষ্টা করে থাকে। এখন আর নকলের প্রবণতা থাকবে না।
লেখক: সহকারী প্রধান শিক্ষক (ইংরেজি) উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চবিদ্যালয়, দুপ্তারা, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ