জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করলেন সভাপতি | স্কুল নিউজ

জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করলেন সভাপতি

যশোরের মণিরামপুরের রাজগঞ্জ শহীদ স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, কোন অভিযোগই সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক। তাকে ফাঁসাতে চক্রান্ত করেই এসব অভিযোগ এনে বরখাস্ত করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বরখ

যশোরের মণিরামপুরের রাজগঞ্জ শহীদ স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, কোন অভিযোগই সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক। তাকে ফাঁসাতে চক্রান্ত করেই এসব অভিযোগ এনে বরখাস্ত করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বরখাস্তের রেজুলেশনে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধির কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সভাপতির বিরুদ্ধে। যে কারণে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির ওই দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহেল ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ আগস্ট প্রথম মেয়াদে এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দেরর ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। প্রথম মেয়াদে সভাপতি থাকার সময় সোহেল রানা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না আনলেও দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর নিয়মিত কমিটির সময় (পূর্বের কমিটি) বিদ্যালয় লাগোয়া দোকান ঘর ভাড়া, অগ্রিম বাবদ ৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত দুইটি অভিযোগ, বিদ্যালয়ে বালু ভরাট, স্কুল ভবনে রঙ করা, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতির অনুদানের ৪ লাখ টাকাসহ রেজুলেশন খাতা নষ্ট করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

অভিযোগ উঠেছে, তারিখ উল্লেখ করে মিটিং দেখিয়ে কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া  হয়েছে।

শিক্ষক প্রতিনিধি ফজলুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত ৬ জুলাই লিখিত পদত্যাগ পত্র সভাপতির কাছে জমা দিতে গেলে তার কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের বরখাস্তের রেজুলেশনে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়েছে।

অভিভাবক সদস্য মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তিনি গত ২৯ এপ্রিল শারীরিক অসুস্থ্যতাজনিত কারণে কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। 

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দোকান ঘর বাবাদ ৯ লাখ খরচের সমুদয় ব্যয় ভাউচারসহ প্রকল্প ব্যয়ের গঠিত কমিটি মারফত খাতওয়ারি হিসেব ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল এবং ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়। সেসব সভার রেজুলেশন থাকলেও সভাপতি সোহেল রানা তা মানতে নারাজ।  

প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তিনি কোন টাকা বিদ্যালয়ে দান করেননি। সভাপতির অভিযোগ করা ৪ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের নয়। এ টাকা শিক্ষকদের কল্যাণ সমিতির, যা জমা করা হয়েছিল।

নিয়মিত কমিটির সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল চন্টা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নে গৃহীত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে গঠিত কমিটির মাধ্যমে সব খরচের ভাউচার ও রেজুলেশন করাসহ ব্যায়ের অনুমোদন করা হয়।

বর্তমান সভাপতি সোহেল রানা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা নগদ গ্রহণ ও নগদ খরচের বিধান নেই। নিয়ম মেনেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক অপরাধ করলে তাকে অ্যাডহক কমিটির বরখাস্ত করার বৈধতা রয়েছে। তবে, করোনার সময় কঠোর লকডাউনের সময়ে একজন প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করাটা মানবতার দিক দিয়ে বেমানান হয়ে যায়।