গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় আলোচিত-সমালোচিত হিরো আলমের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ ও মারধর করার হুমকির অভিযোগ দায়ের করেছেন এক যুবক। অভিযোগটি পুরোই মিথ্যা বানোয়াট বলে দাবি করেছেন হিরো আলম। উল্টো তাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে বলে দাবি করেন আলম।
গত শুক্রবার হিরো আলম ও তার দুই সহযোগীকে অভিযুক্ত করে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হিরো আলমের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনেছে রুবেল মুন্সি (২২) নামে এক তরুণ। রুবেল মুন্সি কুমিল্লার মতলব উপজেলার বড়ইলদা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি এলাকার হাজী আব্দুছ ছাত্তারের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
অভিযোগে বগুড়া জেলা সদর থানার রুলিয়া বাজার এলাকার আশরাফুল হোসাইন হিরো আলম (৩৫), মো. লিমন (২৫) এবং মো. শুভ (৩০) তার দুই সহযোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে রুবেল মুন্সি উল্লেখ করেন, প্রায় ৫ মাস আগে।হিরো আলমের মালিকানাধীন অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন তিনি। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তার কাছ থেকে হিরো আলম ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি সাত মাসের বেতনের ৭০ হাজার টাকা হিরো আলমের কাছে জমা রাখেন। পরবর্তীতে তিনি মোট পাওনা ৯০ হাজার টাকা ফেরত চাইলে হিরো আলম দেই-দিচ্ছি বলে তালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে পাঁচ মাস আগে চাকরি ছেড়ে তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরে ইয়ান ফুড প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন তিনি।
তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় হিরো আলমসহ অভিযোগে উল্লেখিত দুইজনকে সাথে নিয়ে আমার বর্তমান কর্মস্থল ইয়ার ফুড কারখানার সামনে আসে। পরে আমাকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে ফোন করে অফিস থেকে বের হতে বলে। আমি অফিস থেকে বের হলে হিরো আলমের সাথে থাকা প্রাইভেটকারে তুলে মেডিকেল মোড়ে নিয়ে যায়। সেখানে অজ্ঞাত লোকদের সহযোগীতায় আমার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, জি-মেইল আইডি, ফেসবুক আইডি হ্যাক করে তাকে রাত আনুমানিক ৩ টায় ছেড়ে দেয়। পরে এসব বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাকে মারধরসহ জানমালের ক্ষতি করার হুমকি দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে হিরো আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রুবেল আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। সে আমার এখানে চাকরি করতো না। যদি চাকরিই করতো তাহলে আমাকে ডকুমেন্ট দেখাতে বলবেন। আমি লেখাপড়ায় কম, ইংরেজি খুব বেশি ভাল বুঝি না। আমার কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেল ঠিক করে দেয়ার কথা বলে আমার ল্যাপটপসহ কয়েকটি ইউটিউব চ্যালেনের আইডি নিয়ে গিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সেখানে লাখ টাকায় একটি ইউটিউব চ্যানেল অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়। কিনে নেয়া ওই চ্যানেলটি যিনি ব্যবহার করছিলেন আমি তার সাথে যোগাযোগ করে রুবেলের সম্পৃক্ততা পেয়ে তার সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু সে ল্যাপটপ ও চ্যানেলের পাসওয়ার্ড বাবদ আমার কাছে ৯০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি শ্রীপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় তার কাছ থেকে ল্যাপটপ ও আইডি পাসওয়ার্ড নিয়ে নেই।
তিনি আরো জানান, সব ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে আছে। আমি স্বাক্ষী প্রমাণ ছাড়া কোন কাজ করিনা।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, হিরো আলমের বিরুদ্ধে রুবেল নামে এক ছেলে শুক্রবার (০৪ আগস্ট) লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। একজন অফিসারকে (এসআই) বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।