ডাকসু: অংশগ্রহণমূলক ভোট করাই বড় চ্যালেঞ্জ - Dainikshiksha

ডাকসু: অংশগ্রহণমূলক ভোট করাই বড় চ্যালেঞ্জ

ঢাবি প্রতিনিধি |

প্রায় তিন দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমিশনার নিয়োগ দেওয়া কিংবা আচরণবিধি প্রকাশের মতো জরুরি কিছু কাজও এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ছাড়া ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্যের মধ্যে ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করতেও যথেষ্ট আন্তরিক হতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। উপাচার্য জানিয়েছেন, ভোট হবে আগামী ১১ মার্চ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে এবার চারটি প্যানেল হতে পারে। এগুলো হলো ছাত্রলীগের প্যানেল, ছাত্রদলের প্যানেল, বাম ছাত্রসংগঠনের যৌথ প্যানেল এবং কোটা সংস্কার ঘিরে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্র প্যানেল।

নির্বাচনে আগ্রহী প্যানেলগুলোর অনেকেই ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনের দিকে তাকিয়ে আছেন। দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হওয়ায় প্রার্থীর বয়স, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, কারা ভোটার হবে—এসব বিষয়ে পরিবর্তন আনার দাবি তুলেছে অনেক ছাত্রসংগঠন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের শীর্ষ পদের (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) কেউই ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। শীর্ষ পদের কেউই নিয়মিত ছাত্র নন। কেউ আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী নন। ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীর আশঙ্কা, সংগঠনটিতে ‘প্রার্থীজট’ দেখা দিতে পারে। গঠনতন্ত্রের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শীর্ষ নেতাই বাদ পড়ছেন। এ অবস্থায় ছাত্রলীগের হল ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে পদধারী নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বড় অংশই নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কাউকে এখন পর্যন্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কী করা যেতে পারে কিংবা কারা প্রার্থী হবে—এ নিয়ে সংগঠনটির নেতাদের মধ্যে এখনো কোনো আলোচনাও হয়নি।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বলছে, বিএনপি দীর্ঘ সময় বিরোধী দলে থাকায় তাদের সংগঠনে কর্মী সংকট তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে নতুন শিক্ষার্থীদের দলে ভেড়াতে পারছে না তারা। হাতে গোনা কিছু কর্মী থাকলেও তারা ক্যাম্পাসে নিষ্ক্রিয়। ক্যাম্পাসে সহাবস্থান ও পরিবেশ দেখে নির্বাচনের প্যানেল সম্পর্কে জানাবে সংগঠনটি। শীর্ষ নেতারা বাদ পড়লে বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে তাঁদের। বাম ছাত্রসংগঠনের নেতারা জানান, নির্বাচনে সবার জন্য ভয়মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। দীর্ঘ সময় থেকেই ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে ছাত্রলীগের আধিপত্য। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। হলের বাইরে নির্বাচনী বুথ স্থাপন করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনের সংখ্যা ১৩টি। অবশ্য ক্যাম্পাসে কার্যক্রম দৃশ্যমান রয়েছে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশনসহ হাতে গোনা কয়েকটি বাম সংগঠনের। বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা বলছে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য। হলগুলোর নিয়ন্ত্রণও তাদের হাতে। কিন্তু ছাত্রসংসদ নির্বাচন করতে হলে সবার সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে সব জায়গায় সহাবস্থান থাকতে হবে। এটা করতে না পারলে নির্বাচন সফল হবে না।

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ‘নির্বাচনে সহাবস্থান বলতে যা বুঝি, তা এখনো নেই। হলগুলোতে একদলীয় আধিপত্য চলছে। স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। অনেক শিক্ষার্থীই জানিয়েছেন, তাঁরা আমাদের সংগঠন থেকে প্রার্থী হতে চান; কিন্তু ভয়ে বলতে পারছেন না। হল ও ক্যাম্পাসে ভয়হীন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। সবাইকে নির্বাচনের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ হতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো সংগঠনের পক্ষাবলম্বন করতে পারবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী  বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হতে চলেছে। নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ যেমন কাম্য, তেমনি সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন, প্রশাসন সব নিশ্চিত করবে। যারা অংশ নেবে তারাও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে নির্বাচনকে সফল করবে।’ সহাবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় পরিষ্কার, যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী, তাদের কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না। বড় ছাত্রসংগঠনগুলোও আশ্বাস দিয়েছে, সহাবস্থানের বিষয়ে একে অপরকে সহযোগিতা করবে।’

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032129287719727