পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শো থেকে শুরু করে প্রায় সবখানে ডাকসু নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। বেশির ভাগ আলোচনায় একটা প্রশ্ন সবার মধ্যে ঘুরেফিরে এসেছে। ডাকসু নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে কিংবা আদৌ সুষ্ঠু হবে কিনা। আসলে ডাকসু নির্বাচন আমাদের কী শিক্ষা দিল? ডাকসু নির্বাচন নিয়ে যে আশার আলো জ্বলছিল, আশার সেই প্রদীপটি এবার নিভে গেল কিনা, সেই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে অনেকের মনে। ডাকসুতেও জাতীয় নির্বাচনের ছায়া দেখতে পেয়েছে অনেকে।
জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও ডাকসু নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে একটা বিরাট তফাৎ আছে। ডাকসু নির্বাচনে যারা ভোটার ছিল, তারা সচেতন, শিক্ষিত ও মার্জিত রুচির অধিকারী। নির্বাচনের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা দেশের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সমতুল্য শিক্ষক। ৪৩ হাজারের কিছু বেশি ভোটার নিয়ে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে এবং কোনো রকম ভোট কারচুপির অভিযোগ ছাড়াই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের আয়োজন করা তেমন কোনো কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল না। শিক্ষকরা যে দলের মতাদর্শে বিশ্বাসী হোন না কেন, তাঁদের উচিত ছিল কোনো অভিযোগের তীর যাতে নির্বাচনকে কলুষিত না করে, এ ব্যাপারে আগে থেকেই নজর দেওয়া।
কিন্তু অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও সিল মেরে রাখার অভিযোগে কুয়েত মৈত্রী হলে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় সহ-উপাচার্য ও প্রক্টর মহোদয়কে। এমন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে স্বয়ং দেশের শিক্ষকসমাজ বিব্রত বোধ করছে। ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা অতীতে যোগ্য, ত্যাগী ও আদর্শ নেতৃত্ব পেয়েছি। দীর্ঘ সময় ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ায় দেশ যোগ্য নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পত্রিকায় অনেককে লিখতে দেখেছি, তৃণমূল থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার সুযোগটা এভাবেই নষ্ট হয়েছে। আবারও কারচুপি, মারধর ও ভোটের আগেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার মতো বিভিন্ন অভিযোগ ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ দেশবাসীকে অনেকটাই হতাশ করেছে।
মুন্সিপাড়া, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।