ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম : মহাপরিচালক - দৈনিকশিক্ষা

ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম : মহাপরিচালক

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কলেজটির সাবেক অধ্যক্ষ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি বলেছেন, ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় তখন সরকার বলেছিলো আরো দুই-তিন বছর লাগবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য। তখন ঢাকা কলেজ বলেছিলো, আমরা আমাদের সমস্ত কিছু দিয়ে দেবো। বর্তমান কার্জন হল ছিলো ঢাকা কলেজের। কার্জন হল, এর পেছনের পুকুর, শহিদুল্লাহ হল, অধ্যাপকদের চারটি বাসা এ সব ঢাকা কলেজের ছিলো। ঢাকা কলেজ সে সব কিছু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে দিয়েছিলো। ঢাকা কলেজ শুধু তার অবকাঠামো নয়, তৎকালীন ক্যামেস্ট্রি ল্যাবের যে যন্ত্রপাতি সেগুলোসহ রীতিমত টেবিল চেয়ার দিয়ে এসেছিলো। কিছু কিছু শিক্ষকদেরও দিয়ে এসোছিলো যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম তাড়াতাড়ি শুরু হয়। তাই ঢাকা কলেজের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম হয়। 

ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজের ১৮২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্বোধনের ঠিক আগে সোমবার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাখা বক্তব্যে এসব কথা জানান তিনি।

মহাপরিচালক আরো বলেন, এজন্য হাইকোর্টের সামনে থেকে বঙ্গবাজারের দিকে যাওয়ার রাস্তাটি এখনো কলেজ রোড হিসেবে পরিচিত। ঢাকা কলেজ তার সর্বস্ব ত্যাগ করে আজকের হাইকোর্ট ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলো। এরকম নিদর্শন ইতিহাসে বিরল। একটি প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে আরেকটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলো ঢাকা কলেজ। তখন ঢাকা কলেজই সারা বাংলাদেশের নেতৃত্বে ছিলো। ঢাকা কলেজের ছাত্র শিক্ষকরাই দেশের নেতৃত্বে ছিলো।

তিনি বলেন, ঢাকা কলেজ একমাত্র কলেজ যেটি ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই সরকারি কলেজ। কলেজটি সরকারি কলেজ হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ১৮২ বছরের ঐতিহ্য ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের প্রথম কলেজ। বাংলাদেশের এক নম্বর কলেজ হিসেবে এখনো তার অবস্থান ধরে রেখেছে। ঢাকা কলেজ ভারতবর্ষের প্রথম দশটি কলেজের একটি।

এরপর র‌্যালির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মহাপরিচালক। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ, সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোয়াজ্জম হোসেন মোল্লাহ্, সাবেক উপাধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার। এর আগে জাতীয় পতাকা ও কলেজের পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। 

এরপর কয়েক হাজার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের হয়। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে শোভাযাত্রাটি সায়েন্স ল্যাব মোড় হয়ে নীলক্ষেত মোড় ঘুরে ফের কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। ভুভুজেলা, বাঁশি ও নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। 

জানা গেছে, ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল ঢাকা কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও ওই ভবনের নকশা করেছিলেন কর্নেল গ্যাসটিন। খাঁটি ব্রিটিশ ঢঙে, বিলাতি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানটি পালন করা হয় বলে প্রচলিত আছে। এরপর ঢাকা কলেজের জন্য নির্মাণ করা হয় কার্জন হল। ভিক্টোরীয় স্থাপত্যরীতি, মোগল স্থাপত্যশৈলী আর বাংলার স্বতন্ত্র সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য নিয়ে তৈরি ভবনটি ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভাইসরয় লর্ড কার্জন ঢাকায় এসে এর উদ্বোধন করেন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ওই বছরই ঢাকা কলেজ কার্জন হলে স্থানান্তর হয়।

১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার জন্য সব ছেড়ে দিয়ে ঢাকা কলেজ ঠাঁই নেয় পুরাতন হাইকোর্টের লাট ভবনে (বর্তমান সুপ্রিম কোর্টে)। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সশস্ত্র সেনারা হাইকোর্ট ভবন দখল করে তাঁবু হিসেবে ব্যবহার করেন। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামিয়া ইন্টারমিডিয়েট কলেজ বর্তমান কবি নজরুল কলেজের মূল ভবনে কিছুদিন অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম চালায়। এর অল্পদিনেই ফুলবাড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে খান বাহাদুর আবদুল হাইয়ের পুরাতন ভবনে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর ঢাকা কলেজ ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে স্থায়ী জায়গা বন্দোবস্ত পায় মিরপুর রোডে। সেই সময়ে ঢাকা কলেজের আয়তন ছিল ২৪ একর। তবে এরশাদ সরকারের সময় প্রায় ৬ একর জমি ছেড়ে দিতে হয়। বর্তমানে ঢাকা কলেজের মোট জমির পরিমাণ ১৮ দশমিক ৬ একর।

 

সরকারি স্কুলে শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেলেন ১ হাজার ১১৬ প্রার্থী - dainik shiksha সরকারি স্কুলে শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেলেন ১ হাজার ১১৬ প্রার্থী প্রশ্নকর্তা অজ্ঞাতে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কাল - dainik shiksha প্রশ্নকর্তা অজ্ঞাতে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কাল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে ইসিতে চিঠি - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে ইসিতে চিঠি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় সাড়ে ১৮ লাখ আবেদন - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় সাড়ে ১৮ লাখ আবেদন যা আছে শিক্ষামন্ত্রীর হলফনামায় - dainik shiksha যা আছে শিক্ষামন্ত্রীর হলফনামায় নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণ স্থগিত - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণ স্থগিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035638809204102