ঢাবিতে ‘চেয়ার’ আছে নিয়োগ নেই - Dainikshiksha

ঢাবিতে ‘চেয়ার’ আছে নিয়োগ নেই

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে বিশিষ্টজনদের নামে ‘চেয়ার অধ্যাপক’ পদ রয়েছে। শিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে এসব পদে সম্মানিত ব্যক্তিরা নিয়োগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর ও বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাবিতে এরকম পদ রয়েছে ৮টি। তবে দীর্ঘদিন ধরে এর চারটি চেয়ারই শূন্য পড়ে আছে। নতুন হওয়ায় দুটিতে এখনও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ‘বেগম জেবুন্নেসা এবং কাজী মাহবুবুল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টে’র অর্থায়নে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ প্রবর্তন করা হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন, রাজনীতি, ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ে অধ্যাপক সমমর্যাদা সম্পন্ন একজন বিশিষ্ট গবেষক এ চেয়ারে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তিনি অধ্যাপকের সমান বেতন-ভাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সুবিধা পান। এক বছরের মেয়াদ হলেও ক্ষেত্র বিশেষে তা দু’বছর করার সুযোগ রয়েছে। চেয়ার প্রবর্তনের ১৮ বছরে এ পর্যন্ত মাত্র দু’জন গবেষক এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন। প্রথমে এনায়েতুর রহিম ও পরে হাসান আজিজুল হক ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ হিসেবে কাজ করেন। এ প্রসঙ্গে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ মনোনয়ন কমিটির সদস্য কাজী শহীদুল্লাহ  বলেন, নানা বাস্তবতায় গত তিন বছর এ চেয়ার শূন্য রয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে নতুন নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ চেয়ারের তহবিলে এখন এক কোটি টাকা জমা রয়েছে বলে জানান তিনি।

ভারতীয় হাইকমিশনের অর্থায়নে ‘রবীন্দ্র চেয়ার অধ্যাপক’ পদের যাত্রা শুরু ২০১১ খ্রিস্টাব্দে। বিভিন্ন বিভাগে এ পদের জন্য ভারতের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খ্যাতিমান কোনো অধ্যাপক এক বছর মেয়াদে নিয়োগ পান। বর্তমানে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মহুয়া মূখার্জি এ পদে কাজ করছেন। তিনি ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগে সংযুক্ত রয়েছেন। গৌড়ীয় নৃত্যের এই বিশেষজ্ঞ  বলেন, নৃত্যকলা বিভাগে তিনি ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি লেকচার-সেমিনারে অংশ নিচ্ছেন। নতুন বিভাগ হওয়ায় এখনও মাস্টার্স পর্যায়ে কোনো শিক্ষার্থী এখানে নেই। তাই গবেষণা করানো সম্ভব হচ্ছে না। আগামী জুনে তার মেয়াদ শেষ হবে।

প্রখ্যাত বাঙালি পদার্থবিদ সত্যেন বোসের নামানুসারে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ‘বোস চেয়ার’ প্রবর্তিত হয় ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে পদার্থবিদ্যার নামকরা কোনো অধ্যাপক এ পদে নিয়োগ পান। কিন্তু গত চার দশকেরও বেশি সময়ে এ পদে মাত্র তিনজন অধ্যাপক নিয়োগ পেয়েছেন। অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী, অধ্যাপক এমএএম মুহত্তাসাম ও সর্বশেষ ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক এএম হারুন অর রশীদ ‘বোস চেয়ার’ হিসেবে কাজ করেন। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার বলেন, মাঝে একবার এ পদে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এরপর কী হয়েছে তিনি জানেন না।

এ বিভাগে ‘আবদুর রব চৌধুরী চেয়ার অধ্যাপক’ নামে আরেকটি পদ ছিল। বিভাগের প্রয়াত অধ্যাপক লতিফ চৌধুরীর বড় ভাইয়ের নামে তাদের পারিবারিক অর্থায়নে এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে এটি ‘থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স’ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ পদেও দীর্ঘদিন কোনো অধ্যাপককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ ২০০৭-০৮ খ্রিস্টাব্দে ফরহাদ ফয়সাল নামে বিদেশি একজন অধ্যাপক এখানে কাজ করেন। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম আরশাদ মোমেন বলেন, বিদেশি কোনো অধ্যাপককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এ জন্য বিদেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয়। এগুলো জটিল প্রক্রিয়া।

রসায়ন বিভাগে রয়েছে ‘মোকারম হোসেন খন্দকার চেয়ার অধ্যাপক’ পদ। আশির দশকের গোড়ার দিকে এটি সৃষ্টি করা হলেও এ পর্যন্ত শুধু অধ্যাপক সৈয়দ জহির হায়দার এ পদে নিয়োগ পান। এ ব্যাপারে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নীলুফার নাহার বলেন, একটি সম্মানিত পদ তৈরি করে

যদি সেখানে নিয়োগই না দেওয়া হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ থাকে না। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর চেষ্টা করেছেন।

কিন্তু কাকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, তা নিয়ে মতৈক্য না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।

‘ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স’ বিভাগে রয়েছে ‘এল আর সরকার চেয়ার প্রফেসর’। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর লুৎফর রহমান সরকারের (এল আর সরকার) নামে এটি প্রবর্তিত হয়। বর্তমানে এ পদে থেকে গবেষণা করছেন অধ্যাপক ড. শহীদ উদ্দিন আহমেদ।

বাংলা বিভাগে ‘ড. আহমদ শরীফ অধ্যাপক চেয়ার’ চালুর উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে শিক্ষাদান করা হয় এরকম যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে অবসরপ্রাপ্ত একজন অধ্যাপক সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য এ পদে নিয়োগ পাবেন।

ভারত সরকারের অর্থায়নে হিন্দি ভাষা শিক্ষার প্রসারে সম্প্রতি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের আওতায় ‘হিন্দি চেয়ার’ প্রতিষ্ঠার জন্য সমঝোতা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এ পদে যেহেতু সম্মানিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে নিয়োগ দেওয়া যায় না, সে জন্য নিয়োগে অনেক সময় বিলম্ব হয়। যখন উপযুক্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়, তখন বিভাগগুলো এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়ে থাকে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003993034362793