তথ্য গোপন করে কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম পরিবর্তন করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেখিয়ে সরকারিকরণের তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 'অস্তিত্বহীন' ওই প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণে গত ৯ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় জিও জারি করায় জনমনে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সরকারি স্কুল-কলেজবিহীন প্রতিটি উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কলেজ সরকারিকরণ করা হবে। সে অনুযায়ী কেশবপুর ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ করা হয়েছে। তাই এ উপজেলায় আর কোনো কলেজ সরকারিকরণ না হওয়ার আশঙ্কায় তথ্য গোপন করে কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম পরিবর্তন করে কেশবপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় দেখিয়ে সরকারিকরণের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরের পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সরকারিকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর টি এম জাকির হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের টিম প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন পরিদর্শন করে। তারা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, প্রতিষ্ঠটানটি কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে পরিচালিত হচ্ছে। এর পরই গত ১৬ আগস্ট এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান এবং অধ্যক্ষ আছাদুজ্জামান দাতা হয়ে এর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর ডিড অব গিফট সম্পাদন করেন।
এদিকে জিও জারির প্রাক্কালে কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম না থাকায় টনক নড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এ সময় গত ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত স্মারকে প্রতিষ্ঠানের নাম যাচাইয়ের জন্য আবারও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর চিঠি দেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাম সংশোধন-সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই করার জন্য স্মারকে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে পত্র পাঠান। গত ৯ অক্টোবর কেশবপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে জিও জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অধ্যক্ষ মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ভুলক্রমে কেশবপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় হয়েছে, যা সংশোধনের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, তাদের দপ্তরের কাগজপত্রে কেশবপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।
এ ব্যাপারে ইউএনও মিজানুর রহমান জানান, যে প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণ করা হয়েছে, এই নামের কোনো প্রতিষ্ঠান এ উপজেলায় নেই। আসলে হবে কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, যা সংশোধনের চেষ্টা চলছে।
সৌজন্যে: সমকাল