তদন্তের জালে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা - দৈনিকশিক্ষা

তদন্তের জালে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কমিটি বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ দু’টি পদ হারিয়েছেন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন সিনিয়র সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দেয়া হয়েছে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। এবার ছাত্রলীগের বিতর্কিত শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত। এরা কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন। বিতর্কিত এসব নেতার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড পর্যালোচনাসহ তাদের কার্যক্রমের ওপর চলছে নজরদারি। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংগঠন থেকে বাদ পড়তে পারেন এসব নেতা। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা এমন তথ্যই দিয়েছেন। গত মে মাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার পর থেকেই আন্দোলনে রয়েছেন এ সংগঠনের একটি অংশ। 

যারা বিগত সোহাগ-জাকির নেতৃত্বাধীন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। কিন্তু শোভন-রাব্বানী এদের অনেককেই কমিটিতে রাখেননি। আবার যাদের রেখেছেন তাদেরও যোগ্য মূল্যায়ন হয়নি বলে দাবি তাদের। এরপর পদবঞ্চিতরা ৩০১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা বিতর্কিত ১০৫ জনের তালিকা প্রকাশ করে। এদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কমিটি বাণিজ্য, মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকা, বিবাহিত, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, বয়সোর্ধ্ব, অছাত্র বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তান এবং রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, পদ পাওয়া এসব নেতা স্ব স্ব পদের জন্য অযোগ্য। পদবঞ্চিতরা এদের কমিটি থেকে বাদ দিতে লাগাতার আন্দোলন করলেও শোভন-রাব্বানী তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন পদবঞ্চিতরা। একপর্যায়ে তীব্র চাপের মুখে বিতর্কিত ১৯ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করলেও তাদের তালিকা প্রকাশ করেননি। এমনকি ঘোষণা দেয়ার পরও তাদের পদ থেকে বাদ দেননি।

তাই ক্ষোভ বাড়ে পদবঞ্চিতদের। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা বিতর্কিত ৭২ জনের একটি তালিকা তৈরি করে। যেখানে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয়জন। ১৫ জন বিবাহিত। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এমন একাধিক নেতাও কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। জামায়াত পরিবারের সন্তান ও গোপনে শিবিরের রাজনীতি করেছেন এ রকম কয়েকজনও ছাত্রলীগের পদে আছেন। সদ্য পদত্যাগকারী ছাত্রলীগ সেক্রেটারি গোলাম রাব্বানীর জেলা মাদারীপুর থেকেই কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে ২২ জনের। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের হস্তক্ষেপে উদ্ভূত সংকট নিরসন করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়। এদিকে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নজরদারিতে রেখেছেন শেখ হাসিনা। যেকোনো সময় ছাত্রলীগের মতো শুদ্ধি অভিযান চলবে এসব সংগঠনেও। এ নেতা জানান, শোভন ও রাব্বানীকে অব্যাহতি দেয়া হলেও ছাত্রলীগের আরো অনেকের বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত। যারা বিভিন্ন কমিটি থেকে নানা অপকর্মে নিজেদের জড়িয়ে রেখেছেন।

এদের মধ্যে আছেন বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তানও। তাই যেকোনো সময় এসব নেতাকেও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সেজন্য ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকেও নির্দেশনা দেয়া হবে। এ নেতা বলেন, এরা ছাত্রলীগে থেকে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এদিকে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এবারই প্রথম এ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এর আগে কাউকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দেয়া হলেও সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগও। জয়-লেখককে ঘিরে নতুন রাজনৈতিক বলয় তৈরি হলেও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে অনুমান করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই ছাত্রলীগের আগাম সম্মেলনের কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে পূর্ণ সাংগঠিক ক্ষমতা দেয়া হলেও সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে তাদের বলা হয়েছে। বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পরপরই ছাত্রলীগের সম্মেলনের আয়োজন করতে শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হবে। আবার পরিস্থিতি ডিমান্ড করলে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগেই ছাত্রলীগের সম্মেলন করতে হতে পারে। সার্বিক বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059759616851807