তদন্তে গেছেন, সব কাগজপত্র এনেছেন। কিন্তু ঘুষ কম হওয়ায় দুই বছরেও প্রতিবেদন জমা দেননি। কেউ কেউ প্রতিবেদন জমা না দিয়েই চলে যাচ্ছেন। ফলে বিপাকে পড়ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা। অফিসের নথিতেও থাকছে ভিন্ন রকম তথ্য। এমন সব অঘটনের জন্মদাতা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কাছে রক্তচোষা হিসেবে পরিচিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) শিক্ষা পরিদর্শক ও সহকারি শিক্ষা পরিদর্শকরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন ৩৭ হাজার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, নিরীক্ষা ও তদন্তের দায়িত্ব ডিআইএর। এখানে কর্মরত শিক্ষা পরিদর্শক ও সহকারি শিক্ষা পরিদর্শকরা মূলত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা।
শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর মহাখালীর টি এন্ড টি মহিলা কলেজ ও আই পি এইচ স্কুল এন্ড কলেজে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে তদন্ত ও পরিদর্শনে যান সহকারি শিক্ষা পরিদর্শক প্রলয় দাস। পরিদর্শনের জন্য ওই প্রতিষ্ঠান দুটির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মূল সনদসহ এমপিওভুক্তির অনেক কাগজ এনেছিলেন যাচাই করার জন্য। এমপিওর কাগজে সমস্যার কথা বলে ঘুষও নিয়েছিলেন আড়াই লাখ টাকা। কিন্তু দুই বছরেও সেই কাগজ যাচাই শেষ হয়নি প্রলয়ের। গত মাসে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বদলি হয়ে গেছেন শরীয়তপুরের এক সরকারি কলেজে।
তবে, ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রলয় দাস। কেন রিপোর্ট জমা দেননি এমন প্রশ্নের জবাবে প্রলয় জানান, ‘অনেকেই অনেক প্রতিবেদন জমা না দিয়ে বদলি হয়ে গেছেন।’
শুধু প্রলয়েরর দুই প্রতিষ্ঠান নয়, এমন অসংখ্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও তদন্ত করেছেন ডিআইএর অনেক কর্মকর্তা, ঘুষও নিয়েছেন। কিন্তু চাহিদামতো না হওয়ায় প্রতিবেদন জমা না দিয়েই চলে গেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এর ফলে ডিআইএর কর্মকর্তাদের ভ্রমণ নথিতে থাকবে ওইসব প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের তথ্য। কিন্তু বাস্তবে তদন্ত বা পরিদর্শন প্রতিবেদন থাকবে না। ফলে ভবিষ্যতে তদন্ত বা পরিদর্শনের সময় বিভ্রান্ত হবে অফিস। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময় পরে পরিদর্শন করার বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআইএর পরিচালক ও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা অধ্যাপক কাজী মো: আবু কাইয়ুম গত বৃহস্পতিবার জানান, এমন অভিযোগ তিনি প্রথম শুনলেন। ডিআইএ থেকে ময়মনসিংহে বদলির আদেশ হওয়ায় কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি পরিচালক। গতকাল মঙ্গলবার অবধি নতুন পরিচালক নিযুক্ত করা হয়নি।
জানা যায়, শিক্ষকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ, আর্থিক দুর্নীতি, ভুয়া কাগজপত্র ও এমপিও ইনডেক্স ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে টি এন্ড টি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ৫ আগস্টের পর পালিয়েছেন। সঙ্গে নিয়ে গেছেন শিক্ষকদের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।