তুষ্টির মৃত্যুর ঘটনায় একাধিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ - দৈনিকশিক্ষা

তুষ্টির মৃত্যুর ঘটনায় একাধিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান তুষ্টির মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে তার একাধিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে ওইদিন রাতে এবং সকালের বিষয়ে পৃথক পৃথক বর্ণনা দিয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তুষ্টির এক ছেলে বন্ধুকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার বারহাট্টায়। তুষ্টিদের নেত্রকোনার আটপাড়ার বাড়ি থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মৃত তুষ্টির। একই এলাকার হওয়াতে তুষ্টির ভালোমন্দের বিষয়ে তাকে জানাতেন তুষ্টির রুমমেট জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষার্থী জানায়, ঘটনার দিন ভোর সাড়ে ৫টার পরে তুষ্টির রুমমেটের ফোন পেয়ে আজিমপুর সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের ১৮ নম্বর ভবনের নিচে এসে বাথরুমের দরজা বন্ধ দেখতে পান।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

অনেক ডাকাডাকির পরে দরজা না খোলায় এ সময় বাথরুমের পেছনের ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে দেখার চেষ্টা করেন তিনি। ভেন্টিলেটর দিয়ে শিক্ষার্থীর পা দুটো বাথরুমের দরজার সঙ্গে আটকে থাকতে দেখতে পান। দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বাড়িওয়ালা এবং প্রতিবেশীদের পরামর্শে ৯৯৯ নাইনে ফোন দিয়ে সাহায্য চান। ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে দরজার নিচ দিয়ে ভেঙে তুষ্টিকে বাথরুম থেকে বের করে তাদের গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান।

গাড়ির পেছনে রিকশা নিয়ে তুষ্টির ওই বন্ধুও হাসপাতালে যান। তুষ্টিকে বাথরুম থেকে বের করার পর থেকে শুরু করে হাসপাতাল নেয়া পর্যন্ত পুরোটা সময় তিনি তুষ্টির সঙ্গে ছিলেন।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

তুষ্টির রুমমেটদের আরেকজন যিনি সর্বক্ষণ তুষ্টির সঙ্গেই থাকতেন। বাসার রান্নাবান্না থেকে শুরু করে বেশির ভাগ কাজই করতেন তুষ্টির এই বান্ধবী। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ইয়ারমেট এবং একই হল-এ থাকাতে তুষ্টির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই তার ভালো বন্ধুত্ব। তুষ্টির সঙ্গে তিনিও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা হলে থাকতেন।

করোনার কারণে হল বন্ধ থাকায় ধানমণ্ডিতে তার এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় থাকতেন। মেসে খুব কম থাকতেন। সূত্র জানায়, তুষ্টির এই বান্ধবী জানিয়েছেন তুষ্টির মৃত্যু ঠিক এক সপ্তাহ আগে তারা দুজনে মিলে স্টাফ কোয়ার্টারের নিচতলায় চারজন মিলে দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। নিজেরাই রান্নাবান্না করে খেতেন। অধিকাংশ সময় রান্না করতেন তিনি। তুষ্টি মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়াতে তার দেখাশোনা করতেন তিনি।

এর আগে তুষ্টি তার এই বন্ধবীকে জানান, তার শরীর ভালো না থাকায় টিউটোরিয়ালের প্রস্তুতি নিতে পারেননি। টিউটোরিয়ালের ফলাফল খারাপ হতে পারে। ঘটনার দিনও রান্না করেন তুষ্টির ওই বন্ধু। ওইদিন নিউমার্কেট থেকে ফেরার পথে তারা দুজনেই জ্বর এবং ঠাণ্ডার ওষুধ ক্রয় করেন। রাত ৯টার পরে ক্যাম্পাস থেকে ফিরে স্থানীয় দোকান থেকে খাবার পানি কিনে আনেন দুজনে।

এরপর তারা একসঙ্গে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করেন। রাতে ওই শিক্ষার্থী ওষুধ খেয়ে ১২টার আগেই ঘুমিয়ে পড়লেও তুষ্টি মুঠোফোনে সিনেমা এবং ফানি ভিডিও দেখছিলেন। অন্যান্য সময় রাতের বেলা তুষ্টি বাথরুমে যাওয়ার সময় তার ওই বান্ধবীকে ডাকলেও ওইদিন তিনি আর তাকে ডাকেননি।

এ বিষয়ে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ইতিমধ্যে মৃত শিক্ষার্থীর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য ইতিমধ্যে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। গতকালও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে খুব শিগগিরই প্রতিবেদন দেয়ার কথা জানিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলছে। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে আমাদের বহুমুখী তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032238960266113