তৎপর অসাধু চক্র: বিনামূল্যের নতুন পাঠ্যবই - দৈনিকশিক্ষা

তৎপর অসাধু চক্র: বিনামূল্যের নতুন পাঠ্যবই

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আগামী ’২০ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের চার কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হচ্ছে ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ কপি বিনামূল্যের পাঠ্যবই। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, তবে প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপতে অসাধু মুদ্রাকরদের তৎপরতায় বেকায়দায় পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। কাগজের মূল্য প্রতি টনে প্রায় ২০ হাজার টাকা কমলেও এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিম্নমানের ব্যবহার অযোগ্য কাগজে বই ছাপার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এনসিটিবি ও মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে ধরা পড়েছে অন্তত ১৮ প্রতিষ্ঠান। বাতিল করা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৮শ’ মেট্রিক টন কাগজ। নিম্নমানের ছাপা, মলাট ও ভুলে ভরা ছবিসহ নানা কারণে কেটে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এক লাখ কপি পড়ার অযোগ্য বই।

এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা সদস্য (টেক্সট) প্রফেসর ফরহাদুল ইসলাম বলেছেন, নিম্নমানের কাগজে বই ছাপা, নিম্নমানের কালি ও গ্লু ব্যবহারসহ নানান অনিয়মের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাগজ বাতিল (ছাপার অযোগ্য) করা হয়েছে। তাদের পুনরায় দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কাগজ কিনতে বাধ্য করা হয়েছে। কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হচ্ছে না।

কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো- এবার কাগজের দাম টনপ্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা কমেছে। এরপরও কেউ কেউ নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার চেষ্টা করছে। আমাদের অগোচরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বই ছেপেছিল। সেখানেও ছাড় পায়নি। নিম্নমানের ছাপা, মলাট ও ভুলে ভরা ছবিসহ নানা কারণে কেটে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক লাখ কপি পড়ার অযোগ্য বই। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে মানসম্পন্ন বই নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কোন ছাড় হবে না এটাই শেষ কথা।

জানা গেছে, সরকার আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের চার কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ কপি বই ছাপছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে ১০ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৩৭৫ কপি ও মাধ্যমিক স্তরে ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯ কপি বিনামূল্যের বই বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যেই বেশিরভাগ বই মাঠ পর্যায়ে চলে গেছে। আগামী ১৫ নবেম্বরের মধ্যে পাঠ্যবই ছাপার পুরো কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

কিন্তু বই ছাপা ও বিতরণের শেষ পর্যায়ে এসে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে সরকারকে। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সক্রিয় হলেও বই বিতরণ কাজের মধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা সামাল দিতেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে এনসিটিবিকে। তবে মান মূল্যায়নের কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ব্যুরো ভার্টিটাস বাংলাদেশ (প্রাইভেট) লিমিটেড ও কন্টিনেন্টাল ইনস্পেকশন বিডি লিমিটেডকে সামাল দিতে হচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীদের মূল কর্মকা-। অবশ্য মান মূল্যায়নের কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নিম্নমানের কাগজে বই ছাপতে চায়।

নিম্নমানের কাগজ ও বই ধরলেই অভিযোগ তোলা হয় আমরা খারাপ, হয়রানি করি ইত্যাদি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টিরও চেষ্টা হয়। তবে এনসিটিবির মতো এ প্রতিষ্ঠানও বলছে, মানের ক্ষেত্রে কোন ছাড় হবে না।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, আন্তর্জাতিক দরপত্রে বিদেশী প্রতিষ্ঠান ঠেকাতে এবার প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কমমূল্যে প্রাথমিক স্তরের সব বই ছাপার কাজ নিয়েছে কিছু দেশীয় মুদ্রাকর (প্রিন্টার্স)। অনেক প্রতিষ্ঠানই কমদামে কেনা নিম্নমানের কাগজে বই ছেপে লাভ পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত।

মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের মান যাচাইয়ে সরকার নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স ব্যুরো ভেরিটাস’ এনসিটিবি সচিবের কাছে এক চিঠিতে বলেছে, টাঙ্গাইল অফসেট প্রেস ব্যুরো ভেরিটাসের পরিদর্শন ছাড়াই নিজেদের কেনা কাগজে বই ছাপাচ্ছে। তাদের বারবার সতর্ক করার পরও তারা অননুমোদিত কাগজেই বই ছাপছে। তাদের ছাপাখানায় অনুমোদনহীন প্রচুর কাগজের রিল রয়েছে।

এ রকম আরও কয়েকটি প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজেদের ইচ্ছামতো কাগজ কিনে বই ছাপার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ অন্যের (ভাড়া করা) ছাপাখানায় বই ছাপতে এনসিটিবির অনুমোদন পেতে কর্মকর্তাদের কাছে তদবির চালাচ্ছেন, চাপ প্রয়োগ করছেন। তবে বইয়ের মান রক্ষায় অনড় এনসিটিবি।

শর্ত লঙ্ঘন করে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই মুদ্রণের চেষ্টা করছে কিছু অসাধু প্রিন্টার্স (ছাপাখানার মালিক)। এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা সদস্য (টেক্সট) প্রফেসর ফরহাদুল ইসলাম জানান, নিম্নমানের কাগজে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার উদ্যোগ নেয়ায় ১৮ ছাপাখানার এক হাজার ৭৬১ টন কাগজ বাতিল করে শর্ত অনুযায়ী পুনরায় কাগজ কিনে বই ছাপতে বাধ্য করা হয়েছে।

প্রাথমিক স্তরেও নিম্নমানের কাগজ সরবরাহ করায় কয়েকটি কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১১শ’ টন কাগজ ‘ছাপার অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া এনসিটিবির শর্তের তোয়াক্কা না করে বই ছাপায় সাতটি ছাপাখানার প্রায় এক লাখ কপি বই কেটে দিয়েছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা।

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ’২০ শিক্ষাবর্ষে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপতে অসাধু মুদ্রাকরদের বেপরোয়া তৎপরতা ও কাগজের মান মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতায় বেকায়দায় পড়েছে এনসিটিবি। এবার কাগজের মূল্য প্রতি টনে প্রায় ২০ হাজার টাকা কমলেও এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার চেষ্টা থেকে পিছু হটছে না। আবার সরকার নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানও কাগজের মান পরীক্ষায় অযথা সময়ক্ষেপণ করছেন।

সোমবার এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা সদস্য (টেক্সট) প্রফেসর ফরহাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাসহ নানা অনিয়মের কারণে সাতটি ছাপাখানার প্রায় এক লাখ কপি বই ধ্বংস করে দিয়েছেন এনসিটিবির পরিদর্শকরা। জানা গেছে, এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হুমায়রা প্রিন্টার্সের ৩৮০ কপি, লেটার এ্যান্ড কালার প্রিন্টিং প্রেসের সাড়ে চার হাজার কপি, বুকম্যান প্রিন্টিং প্রেসের তিন হাজার ৫০ কপি, ভাই ভাই প্রিন্টিং প্রেসের ২৬ হাজার ৯২০ কপি, নুরুল ইসলাম প্রিন্টিং প্রেসের ৫০ হাজার কপি ও শ্রাবণী প্রিন্টার্সের ৫০০ কপি বই ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া রেজা প্রিন্টার্সের তিনটি পাঠ্যপুস্তকের ফর্মা বিনষ্ট করা হয়েছে।

জানা গেছে, মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপতে নিম্নমানের কাগজ কেনায় ১৮ প্রতিষ্ঠানের কাগজ ‘ছাপার অযোগ্য’ ঘোষণা ও বাতিল করেছে এনসিটিবি। ওসব প্রতিষ্ঠানকে শর্ত অনুযায়ী কাগজ কিনে বই ছাপতে বাধ্য করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে অনুপম প্রিন্টার্সের ৮০ টন, ফাহিম প্রিন্টিং এ্যান্ড পাবলিকেশন্সের ১২, ফাইভ স্টার প্রিন্টিং এ্যান্ড পাবলিকেশন্সের ৫০, নাহার প্রিন্টার্সের ২৬, নিউ সুজন আর্ট প্রেসের ৭২, কাশেম এ্যান্ড রহমান প্রিন্টিং প্রেসের ৩০, কোহিনূর আর্ট প্রেসের ২৫, সৃষ্টি প্রিন্টার্সের ১৫, পেপার প্রসেসিং এ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ২৫, কমলা প্রিন্টার্সের ৭৩, ইন্টারনেট ওয়েব প্রিন্টার্সের ৪০, হক প্রিন্টার্সের ৩০, সিটি সানজানা আর আর রূপালীর ৫০, নাজমুন নাহার প্রেসের ১৩, করতোয়া প্রিন্টার্সের ২০ এবং আনমল নিউ অফসেট প্রেসের ১০ টন কাগজ বাতিল করা হয়েছে। এসব কাগজ ৬০ জিএসএমের কম ছিল, ব্রাইটনেসও কম ছিল।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে নিম্নমানের কাগজ ও বই দিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়ে কোন কোন অসাধু ব্যবসায়ী উল্টো মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানেরও বিরুদ্ধেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তবে মান যাচাইয়ে সর্বোচ্চ কঠোর থাকার ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটোই বলছে, নিম্নমানের কাগজ ও বই ধরলেই অভিযোগ তোলা হয় ‘আমরা খারাপ, হয়রানি করি’ ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে মানের ক্ষেত্রে কোন ছাড় হবে না। বহু প্রতিষ্ঠানের কাগজ বাতিল করা হয়েছে। যখনই যে ধরা পড়বে বাতিল হবে।

দুটি প্রতিষ্ঠানের একটি কন্টিনেন্টাল ইন্সপেকশন কো. লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মাহবুব উল্যাহ বলেন, নিম্নমানের কাগজ ও বই ধরলেই অভিযোগ তোলা হয় আমরা খারাপ, হয়রানি করি। তবে মানের ক্ষেত্রে কোন ছাড় হবে না, এটাই শেষ কথা।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যদি নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপতে দিতাম তাহলে আমরা ভাল হয়ে যেতাম। আসলে যখনই নিম্নমানের কাগজ ধরা পড়ছে তখনই বাতিল করছি বলে আমরা কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কাছে খারাপ হয়ে গেছি। তবে আমরা সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে কাজ করব। শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্পন্ন বই নিশ্চিত করব, এটাই শেষ কথা।

জানা গেছে, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের বইয়ের মান যাচাইয়ের কাজ পেয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এই দুটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বই ছাপার কাগজ অনুমোদন দেয়। তাদের অনুমোদন অর্থাৎ পরিদর্শন প্রতিবেদন ছাড়া বই মুদ্রণ শুরু করার কোন সুযোগ নেই।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032870769500732