বরগুনার আমতলী থানায় পুলিশি হেফাজতে সানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় আমতলী থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি মো. আবুল বাশারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ মার্চ) রাতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ অভিযোগ দাখিল করেন। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ৬ ও ৭ ধারা মোতাবেক এ অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ বরগুনার আমতলী থানা হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি সানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বলছে, সানু হাওলাদার আত্মহত্যা করেছে। আর সানুর পরিবারের দাবি, পুলিশ নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ ঝুঁলিয়ে আত্মহত্যার কথা বলছে।
আরও পড়ুন : থানায় আসামির মৃত্যু, সেই ওসি প্রত্যাহার
ওসির রুমে আসামির মৃত্যু : হত্যা না আত্মহত্যা?
তবে ঘটনা তদন্ত করতে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বরিশাল রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম এহসান উল্লাহকে। গত ২৮ মার্চ বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলামের নির্দেশে তদন্ত কমিটি আমতলী থানা পরিদর্শন করেছেন। ওই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বরিশাল রেঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান ও বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেন। এ অবস্থায় অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান নিজে সোমবার সন্ধ্যায় ই-মেইলের মাধ্যমে বরগুনার এসপির কাছে অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ দাখিলের বিষয়ে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, সানু হাওলাদার পুলিশি হেফাজতে মারা গেছেন। আত্মহত্যা হোক আর হত্যা হোক, ঘটনা ঘটেছে থানার মধ্যে। চার দিন হলো ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। এ কারণে দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আইন অনুযায়ী আমি লিখিতভাবে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ এই অভিযোগ নথিভুক্ত করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে। অভিযোগ নথিভুক্ত করার পর পুলিশ তদন্ত করবে। পুলিশ কি করল তার ওপর নির্ভর করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
সানুর মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যে মধ্যে আমতলী থানার ওসি মো. আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে একই থানার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও এসআই আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে ২৬ মার্চ রাত ১১টার দিকে সানু হাওলাদারের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। যদিও এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
