শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে ভবিষ্যতে অবশ্যই কারিগরি শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ২০২০ খ্রিস্টাব্দে কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্ট ২০ ভাগে উন্নীত করা হবে। সকল নাগরিককে মৌলিক শিক্ষা দিতে হবে। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষা এবং যেকোন একটি কারিগরি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষকের সংকট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৭,০০০ এর বেশি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ও মান বাড়াতে আরো মানসম্পন্ন শিক্ষক প্রয়োজন। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মান বৃদ্ধির জন্য সিঙ্গাপুরের নানিয়ান পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটে ১১৫০ জন শিক্ষককে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। চীনে ৫৮১ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ’বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা: বাস্তবায়নে গতি প্রকৃতি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিশুকে বছরের প্রথমদিনে বই দেয়া হচ্ছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এবছর ৩৫ কোটি ৪২ লাখ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মোট বই বিতরণ করা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৯৯ লাখ। পাঠ্যপুস্তক প্রদানের ফলে ঝরে পড়ার হার কমছে। সাধারণ বৃত্তি, উপবৃত্তি ও মেধাবৃত্তিসহ ২ কোটি ৬৬ লাখ শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে গত ৯ বছরে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দর্শন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষানীতি প্রণতি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় সকল শিশু এখন স্কুলে যাচ্ছে। যদিও ঝরে পড়া এখনও একটি বড় সমস্যা। শিক্ষাক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের মধ্যে সমতা অর্জিত হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া এবং সকল পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল পেপারলেস করা হয়েছে। ভর্তি, পরীক্ষা গ্রহণ এবং ফলাফল প্রকাশ সময়মত হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে অবকাঠামো নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। ২০২০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ প্রায় ২৪ হাজার ভবন নির্মান সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবদুল খালেকের সভাাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. নাসরীন আহমাদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক। আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব শামসুন নাহার চাঁপা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।