সনদ বিক্রিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে আদালতের আদেশে বন্ধ করে দেয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের বিষয়ে এক ‘উদ্ভট’ আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আদেশে বলা হয়েছে, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর গ্রহণ করবে।
দারুল ইহসানের সব গ্রুপের সনদ বৈধতা পাচ্ছে!
এ ছাড়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হবে বলেও আদেশটিতে বলা হয়েছে। এমন আদেশকে উদ্ভট আ্যখ্যা দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কয়েকটি শিক্ষক সংগঠনের নেতারা। আদেশটি নিম্নরুপ:
মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব মো: কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এ আদেশ জারি করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় তিন হাজার দারুল সনদধারী শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য সুবিধা পাবেন আরো কয়েক হাজার।
তবে, মন্ত্রণালয়ের মঙ্গলবারের আদেশে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শিক্ষা বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন মন্ত্রণালয় এভাবে আদেশ জারি করার ফলে ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির দৌরাত্ম বাড়বে। অভিযোগ রয়েছে, বির্তকিত এ কাজের পিছনে রয়েছে সনদ বিক্রির সঙ্গে জড়িত একটি গ্রুপ এবং মাউশির কয়েক জন কর্মকর্তা। কয়েক কোটি টাকা লেনদেনের মাধ্যমে কাজটি করেছেন।
আপিলের নির্দেশে দারুল ইহসান সনদধারীদের আশাভঙ্গ!
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) জাবেদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছিল না মাউশি। এরফলে এসব শিক্ষক-কর্মচারি এমপিওভুক্তির সুযোগ পাবে। এটা সবার জন্য প্রযোজ্য না। যারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মরত তাদের জন্য প্রযোজ্য।’
গত ১০ জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে ইউজিসির (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) কাছে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বৈধতার বিষয়ে জানতে চায়। ২৫ জুলাই ইউজিসির কর্মকর্তারা মতামত দিয়ে চিঠি দেন মন্ত্রণালয়ে। তাতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের বিভাগ প্রদত্ত ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিলের রায় বহাল রেখে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি রায় দিয়েছে। তাতে পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘আইনের দৃষ্টিতে দারুল ইহসান কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে পড়ে না।’ এখন সনদের বৈধতার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ইউজিসির কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেটি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ে না সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ কীভাবে বৈধতা দেওয়া হলো? সারা দেশের অবৈধ ক্যাম্পাসের হাজার হাজার সনদধারীদের বৈধতা দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সনদের বৈধতা দিতে রাজি নয় ইউজিসি