দিল্লির সহিংসতা : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০, চার জায়গায় কারফিউ - দৈনিকশিক্ষা

দিল্লির সহিংসতা : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০, চার জায়গায় কারফিউ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সফরের মধ্যে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল, তা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গত রোববার সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২০ জন নিহত হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে। আহতের সংখ্যা দেড় শতাধিক। হতাহতদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান উভয়েই রয়েছে।

দিল্লির মৌজপুর, জাফরাবাদ, কারওয়ালনগরে ও চাঁদবাগে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব এলাকায় দাঙ্গাকারীদের ‘শুট অ্যাট সাইট তথা দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দিল্লির সহিংসতা। ছবি সংগৃহীত

দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রে রূপ নেয় দিল্লির মুসলমান অধ্যুষিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিবিসি বলছে, দিল্লিতে এমন সহিংসতা গত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি। মঙ্গলবার রাতে সহিংসতাপ্রবণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবারপুর, গোকুলপুরি, শিব বিহার ও জোহরি এনক্লেভ মেট্রো স্টেশনের গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনো ট্রেন দাঁড়াবে না। ওই এলাকায়সহ দিল্লির আরও ১০ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

উত্তেজনা যেন না ছড়ায়, সেজন্য বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকে সংঘাতের খবর প্রচারের ক্ষেত্রে সাবধান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই উন্মত্ততা বন্ধ করে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উত্তর–পূর্ব দিল্লির ভজনপুরা, চান্দ বাগ ও কারাওয়াল নগরে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় রাস্তায় লাঠিসোঁটায় সজ্জিত লোকেদের দেখা গেছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন দোকান। এদিকে এমন সংঘাত সামাল দিতে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করার আরজি খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দিল্লিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৬ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োজিত থাকায় সেনা নামানোর প্রয়োজন হবে না।

বিবিসি বাংলা জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যাচ্ছে।

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টা পর রবিবার রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা শুরু করে আইনটির সমর্থকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের মধ্যেই রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষ অব্যাহত আছে। তার সফরের দ্বিতীয় ও শেষ দিন মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে দেশটির ৩০০ কোটি ডলারের সামরিক চুক্তি সই হয়।

এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব বিহারে পাস

এদিকে, বিহারে মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী প্রস্তাব বিধানসভায় পাস হয়েছে। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জির (এপিআর) সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ করেছে নীতীশ কুমারের সরকার। প্রস্তাবের মূল বিষয়, রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করা হবে না এবং বিহার সরকারের শর্ত মানলে তবেই এনপিআর কার্যকর করা হবে।

আরও পড়ুন : শহরে ট্রাম্প, তবু যেভাবে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দিল্লি

আজও উত্তপ্ত দিল্লি, মৃত বেড়ে ৭

ট্রাম্পের সফরের মাঝেই রণক্ষেত্র দিল্লি, পুলিশ সদস্য নিহত

বিধানসভায় নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, এনপিআর-এর ফর্ম থেকে আপত্তিকর অংশগুলি বাদ দেয়ার জন্য কেন্দ্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নীতীশ কুমার অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন যে, তার রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করতে দেবেন না। এর সঙ্গে এনপিআর-এর আপত্তিকর অংশগুলি বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সেই দুই প্রস্তাবই পাশ হয়েছে বিধানসভায়।

এর আগে ভারতের পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় এনপিআর বিরোধী প্রস্তাব পাস করেছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি। বিহারে এর পাশাপাশি এনআরসি-ও যোগ করে দেয়া হয়েছে।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034580230712891