দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! | কলেজ নিউজ

দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি!

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকা পালন করা শাহেদুল খবির সিন্ডিকেটের কর্মকর্তারা শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পাচ্ছেন। নানা সময়ে যাদের নামের সঙ্গে বিতর্কজুড়ে ছিলো তারাই এখন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বেশি গুরুত্বপূর্ণ পদে অসীন হয়েছেন। এর ফলে ক্ষোভ বেড়েছে শিক্ষা ক

দীপু মনি ও তার সিন্ডিকেটের রতন মজুমদার ও শাহেদুল খবির সিন্ডিকেটের কর্মকর্তারাই ঘুরেফিরে শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পাচ্ছেন। বছরের পর বছর যারা পুরো শিক্ষা প্রশাসনকে তছনছ করে টাকা বানানোর মেশিন হিসেবে ব্যবহার করেছিলে তাদের আস্থাভাজন ও বিশ্বস্তদের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বেশি গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়া হচ্ছে। গত কয়েকদিনের পদায়ন দেখে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষা ক্যাডারের বঞ্চিত কর্মকর্তারা। শিক্ষা ক্যাডারের কাউকে বদলিভিত্তিক নিয়োগ, পদায়ন ও প্রেষণে নিয়োগের আগে গত ১৬ বছর তাদের পদায়ন ও সংযুক্তি যাচাই করা উচিত শিক্ষা উপদেষ্টা ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও কলেজ শাখার কর্মকর্তাদের। এমন দাবি জোরালো হয়েছে।  

গতকাল রোববার মাউশি সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) পদে সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ আলমকে নিয়োগ দেয়ায় এই ক্ষোভের তীব্রতা বেড়েছে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে। বেসরকারি রতন কুমার মজুমদারের বাড়ীতে ঘন ঘন যাতায়াত করতেন মর্যাদা রক্ষা কমিটির সদস্য ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ফিরোজ আলম। 

দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি!

ফিরোজ আলম বর্তমান বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির শাহেদ-তানভির পরিষদের নির্বাহী সদস্য পদে লড়েছেন। অধ্যাপক শাহেদুল খবির মাউশির পরিচালক (প্রশাসন) এবং সহকারী অধ্যাপক তানভীর হাসান সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ছিলেন। রতনের অনুসারী শাহেদ ও তানভীর শিক্ষা প্রশাসনে দুর্নীতির দূর্গ প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ক্যাডারের সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি ও অসভ্যতাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন।   

তারা সবাই সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে তাদের অবস্থান ছিলো পরিষ্কার।

তানভীর হাসানকে সরিয়ে একই প্যানেলের ফিরোজ আলমকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি তস্য জুনিয়র ৩০তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে পদার্থবিদ্যা বিষয়ের শিক্ষক। অফিস কি তা জানেন না।

শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবী চেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের লোকজন শিক্ষা প্রশাসনে পুরস্কার পাচ্ছেন।

শিক্ষা ক্যাডারের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সরকার যখন শত শত ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছিল, তখন তানভীর-ফিরোজ আলমরা ছাত্রদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছিলেন। সে সময় ফিরোজ আলমের সাবেক কর্মস্থলের (লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ) ছাত্ররা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

একজন কর্মকর্তা বলেন, ফিরোজ আলম জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। তার পদটির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও নেই। তারপরও তাকে মাউশির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা সভায় বসেছেন। তারা এ ধরনের পদায়ন বন্ধের জন্য দাবি জানাবেন। এর আগে এই পদে থেকে রূপক রায় ও তানভীর ক্যাডারের সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন।  দীপু ও রতনের ক্যাশিয়ার ছিলেন রূপক রায়। রূপক ও তানভীর যে কতটা বেয়াদব  তা তারা নিজেরাই জানেন না। এমন মন্তব্য শিক্ষা ক্যাডারের সিনিয়র কর্মকর্তা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান রূপক ও তানভীর শিক্ষা ভবনে নানা কাজে আসা দর্শনার্থীদের সঙ্গে বেয়াদবি করাকে পূণ্যের কাজ মনে করতেন।  শিক্ষা ক্যাডারের চাকরি করেও বেসরকারি রতন ও অমিতের পদলেহন করতেন রূপক ও তানভীর। একই গ্রুপের ও চরিত্রের ফিরোজ আলমকে একই পদে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন শিক্ষা ভবন সংশ্লিষ্টরা।  

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে যারা মিছিল-সমাবেশ করেছিলেন- তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৩দী৬ জনের একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছিলো। তবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর মধ্যে মীর রাহাত মাসুমকে মাউশির সহকারী পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে এনসিটিবিতে বদলি করা হয়েছে।রাহাত মাসুমের বিরুদ্ধেও বেয়াদবির অভিযোগ করেছেন ক্যাডারের সিনিয়ররা।   

শিক্ষা প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের পদায়নের বিষয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার মর্যাদা রক্ষা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, বিগত সরকারের সময়ে শিক্ষা প্রশাসন, সরকারি কলেজসহ শিক্ষা দপ্তরগুলোতে পদায়নের ক্ষেত্রে বদলি নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে।