দুর্নীতি : জরিমানা দিয়ে পদে ফিরতে চান দুই প্রধান শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

দুর্নীতি : জরিমানা দিয়ে পদে ফিরতে চান দুই প্রধান শিক্ষক

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাঙামাটি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাঙামাটি : হিসাবের অসংগতি থাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালিত পৃথক দুইটি বিদ্যালয় থেকে দুই প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহার করে তদন্ত হয়। তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় দুজনকে দেয়া হয় অর্থদণ্ড। দুর্নীতি করে আত্মসাৎ করা সেই টাকা ফেরতও দিয়েছেন তাঁরা। এবার টাকা ফেরত দিয়ে স্ব স্ব পদে বহালের জন্য আবেদন করেছেন প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মিত্র এবং দুলাল হোসেন।

সঞ্জয় মিত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালিত বান্দরবানের ‘রুমা উপজাতীয় আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের’ প্রধান শিক্ষক এবং মো. দুলাল হোসেন রাঙামাটির ‘রাজস্থলী উপজাতীয় আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের’ প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় দুটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড দ্বারা পরিচালিত।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পান দুলাল হোসেন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ পান সঞ্জয় মিত্র। ২০১৯-২০২১ অর্থ বছরে বান্দরবানের ‘রুমা উপজাতীয় আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের’ প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মিত্রের বিরুদ্ধে ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৭২ টাকার দুর্নীতির সত্যতা পায় উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে ২০১৯-২০, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ‘রাজস্থলী উপজাতীয় আবাসিক উচ্চ বিদ্যালের’ প্রধান শিক্ষক দুলাল হোসেনের বিরুদ্ধে ৫১ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৩ টাকার অস্বাভাবিক ব্যয়ের হিসাব পায় উন্নয়ন বোর্ড। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিফর্ম, বই খাতা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, শিক্ষা সফর, বিদ্যালয় রক্ষণা–বেক্ষণসহ ইত্যাদি খাতে বরাদ্দকৃত টাকা নিয়ে হিসাবের অসংগতি থাকায় দুজনকে বিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করে তদন্ত শুরু করে বোর্ড। 

এদিকে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আত্মসাৎ করা অর্থ থেকে সঞ্জয় মিত্র ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪৫ টাকা এবং দুলাল হোসেন ৭ লাখ ১৬ হাজার ৮১৫ টাকা বোর্ডের কাছে পরিশোধ করেন। এ দুই শিক্ষককে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল ও আগস্ট মাস থেকে স্ব স্ব স্কুল থেকে প্রত্যাহার করে উন্নয়ন বোর্ডের রাঙামাটি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হলেও তাঁরা বেতন ভোগ করে আসছেন।

উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, দণ্ড পাওয়া দুই শিক্ষককে আবারো স্ব স্ব পদে পুনর্বহাল করার জন্য প্রকল্প পরিচালকের কাছে আবেদন করেছেন। এ আবেদন পাওয়ার পর এদের পদে বহাল করতে চায় বোর্ডের একটি অংশ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, দণ্ড পাওয়া এ দুই শিক্ষক অপরাধ করার পরও দাম্ভিকতা দেখাচ্ছেন। এদের মধ্য দুলাল হোসেন একটু নমনীয় হলেও সঞ্জয় মিত্র নমনীয় নন। তিনি এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হুমকি দিচ্ছেন এবং বলছেন তাঁর (সঞ্জয়) কিছুই করতে পারবে না কেউ। তাদের আবারও স্ব স্ব পদে বহাল করার খবরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ ও অনাস্থা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ‘টেকসই সমাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের’ পরিচালক মো. জসীম উদ্দীন বলেন, ‘দুই শিক্ষক দোষ করেছেন ঠিকই কিন্তু এতদিন তাদের শাস্তি দেয়া হয়নি, বরং পুরস্কৃত করার মতো হয়েছে। স্কুল থেকে প্রত্যাহার করে রাঙামাটি শহরে বসিয়ে রেখে বসে বসে বেতন দেয়া হয়েছে। আমি সেটা করতে চাচ্ছি না। তাদের স্কুলে পাঠাতে চাচ্ছি। অন্তত স্কুলে বাচ্চাদের একটি অক্ষর হলেও শেখাতে পারবে। তবে তাদের প্রধান শিক্ষক পদে পুনর্বহাল করা হবে কিনা বা আগের স্কুলে বহাল করা হবে কিনা সেটা অবশ্যই ঠিক হয়নি। তবে আগের মতো যেন দুর্নীতি করার সুযোগ না পায় সেদিকে বোর্ডের নজর আছে।’

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নিরূপা দেওয়ান বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে দুই শিক্ষক অর্থদণ্ড পেয়েছেন। তাঁরা স্ব স্ব পদে চাকরি বহাল পাওয়ার যোগ্যতাও হারিয়েছেন।’

নিরূপা দেওয়ান আরও বলেন, ‘এখন তাদের যদি স্ব স্ব পদে বহাল করা হয় তাহলে সেটা হবে দুর্নীতির দায়ে পুরস্কৃত করা। তাদের হয় চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে পারে না হলে তাদের পদ অবনতি করতে পারে। তাদের আবার প্রধান শিক্ষক পদে বহাল করলে বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছাত্রদের মধ্যে অনাস্থা, অসন্তোষ দেখা দেয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে।’ 

শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা - dainik shiksha তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! - dainik shiksha কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন - dainik shiksha ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট - dainik shiksha কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর - dainik shiksha স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061888694763184