দৃশ্যমান হয়েছে বেরোবি শিক্ষার্থীদের আবেগ-ভালোবাসার প্রধান ফটক - দৈনিকশিক্ষা

দৃশ্যমান হয়েছে বেরোবি শিক্ষার্থীদের আবেগ-ভালোবাসার প্রধান ফটক

দৈনিক শিক্ষাডটকম, বেরোবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, বেরোবি : মূল ফটক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য, পরিচিতি, চিন্তা ভাবনা, মননশীলতার চিহ্ন বহন করে। একইভাবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি গেটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নবজাগরণের বার্তা বহন করে। ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য অধিকাংশ বৃদ্ধি ও আকর্ষিত করে প্রধান ফটক। দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষা ও প্রতীক্ষার পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত মূল ফটক (২নং গেট) বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।  

উত্তরের একখণ্ড কাঁচা সবুজের বুকে রক্তবর্ণ কৃষ্ণচূড়া যেমন একুশের চেতনাকে জাগ্রত করে, যেমন করে নারীশিক্ষার- নারীমুক্তির অগ্রদূত এক মহীয়সীকে স্মরণ করায়, ঠিক তেমনি এই প্রধান ফটক মনে করিয়ে দিবে উচ্চশিক্ষার অনন্য এক প্রতিষ্ঠান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময় উপাচার্যদের কাছে শিক্ষার্থীরা মূলফটকের দাবি তোলে। কিন্তু কোন উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আবেগের কথা চিন্তা না করে ভেবেছেন নিজেরটা। প্রতিষ্ঠার দেড়যুগ পর পঞ্চম উপাচার্য অধ্যাপক ড.হাসিবুর রশীদ প্রথম নজর দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের প্রতি। দীর্ঘদিনের সেশনজট নামক ভয়ঙ্কর থাবা থেকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গেল বছরের এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর প্রধান ফটকের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। অল্প সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান প্রধান ফটক দেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

দৃষ্টিনন্দন মূল ফটক পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে গর্বীত ভঙ্গিতে দৃশ্যমান হয়েছে শিক্ষার্থীদের আবেগ-ভালোবাসার সেই প্রধান ফটক। এতে উচ্ছ্বাসিত হাজারো শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠালগ্নে নানান সংকট থাকলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি সেসব সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৃষ্টিনন্দন ফটকটি তিনতলা ভবনের সমান উচ্চতাবিশিষ্ট। উচ্চতা ২৮ ফুট ১১ ইঞ্চি, প্রশস্ত ৮১ ফুট ১১ ইঞ্চি। বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সাদ সিদ্দিকের নকশার আইডিয়াকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। মূল ফটকের দুইটি সমান ট্রাপিজয়েডাল অংশটি নারী ও পুরুষের সমঅধিকার এবং মর্যাদার প্রতিনিধিত্ব করে। খোলা বইয়ের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ফটকটি দেশজুড়ে সব শিক্ষার্থীর জন্য জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, ৪০০ প্রজাতির বিভিন্ন তরু-পল্লব মিলে প্রায় ৩৮ হাজার গাছের সবুজের সমারোহ ক্যাম্পাসটি বর্তমানে ছয়টি অনুষদ ও ২২টি বিভাগ নিয়ে গঠিত। ৭৫ একরের জায়গা জুড়ে সবুজ ছায়ায় ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর উত্তরের বাতিঘর নামে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়।

উত্তরের এ ক্যাম্পাসটিতে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষ্ণচূড়া রোড, দেবদারু রোড, সেন্ট্রাল মাঠ, জিরো পয়েন্ট, বিজয় সড়ক এবং দৃষ্টিনন্দন কেন্দ্রীয় মসজিদ। সবকিছু থাকলেও প্রধান ফটকের মাধ্যমে সেটার পরিপূর্ণতা পেয়েছে।

জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ বলেন, প্রধান ফটক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষত্ব বহন করে। এর স্থাপত্যশৈলী,অনন্য ডিজাইন,অন্তর্নিহিত ভাব সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা ভাবে উপস্থাপন করে। এই নির্মাণাধীন ফটক শিক্ষার্থীদের ১৪ বছরের স্বপ্ন। এই কংক্রিট,রড,সিমেন্ট নির্মিত ফটক সহস্র শিক্ষার্থীর আবেগে নির্মিত এক মিনার। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি এই ফটকে অন্যভাবে অনুভব করি, যখন এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করব আমার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যে স্পৃহা সেটা ঠিক প্রবেশ মুহূর্তে কম্পিত হবে। এটা শুধু একটা  স্থাপনাই নয় এই ফটক ক্যাম্পাসকে পরিচিত করার নতুন এক মনোগ্রাম।

মূল ফটক সম্পর্কে অনুভূতি জানতে চাইলে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজাম মুনিরা বলেন, গেট দেখে আমার সত্যি অনেক ভালো লাগছে। কারণ, একটা সময় গেছে অন্য ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত আমার বন্ধুরা আমাকে ক্ষেপাতো এই বলে যে, তোদের গেট নেই, সেশনজটে পড়ে তোরা বুড়া হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হবি। এসব বলে আমাকে বিরক্ত করত। এই ফটক হওয়ার পর তাদের মুখ বন্ধ হবে। আর একজন শিক্ষার্থী হয়ে আমার অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে, যা বোঝাতে পারব না।

মূল ফটকের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. শাহরিয়ার আকিফ বলেন, আমাদের গেটের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। আর যাকে গেটের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করে চলে যাবেন।

সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039181709289551