দেড় যুগেও এমপিওভুক্ত হয়নি নিম্ন মাধ্যমিকের ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী - দৈনিকশিক্ষা

দেড় যুগেও এমপিওভুক্ত হয়নি নিম্ন মাধ্যমিকের ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সারাদেশের এক হাজার ৩৩৩টি নন-এমপিও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিনা বেতনে পাঠদান করে চলেছেন ১০ হাজার ৬৬৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী। শিক্ষকদের মতে, সবকিছু ঠিকঠাক হয়েও শেষ পরযন্ত প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রশি টানাটানিতে তাদের বেতন-ভাতার বিষয়টি আটকে আছে।

এ ধরণের বিদ্যালয়গুলোর প্রায় অর্ধেকই বালিকা বিদ্যালয়। এসব শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তি কিংবা সরকারিকরণের আশায় অপেক্ষা করছেন বছরের পর বছর। পাশাপাশি ‘নন-এমপিও নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম’ ব্যানারে তারা নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনও করছেন। গত ৯ মে তারা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে পদযাত্রা এবং মন্ত্রী ও সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেন। তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন। কিন্তু এখনও তাদের ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

ঝিনাইদহের বি. কে. নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই, উপবৃত্তি, ল্যাপটপ দিয়েছে সরকার, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও দিয়েছে; অথচ বেতন দিচ্ছে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা কোনোভাবে বেঁচে আছি।’ বেতন ছাড়া এত বছর ধরে কেন কাজ করছেন_ জানতে চাইলে তিনি জানান, একদিন সরকারি বেতন পাবেন_ এমন আশাতেই তার মতো বেশিরভাগ শিক্ষক লেগে রয়েছেন। এসব স্কুলের শিক্ষার্থী বছরে দু’বার ৭০ থেকে ১০০ টাকা পরীক্ষার ফি দিয়ে থাকে। এর বেশিরভাগই পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজে খরচ হয়ে যায়। এ ছাড়া উপবৃত্তি পাওয়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অনুকূলে ১৫ টাকা টিউশন ফি পায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। স্কুলগুলোর এ ছাড়া অন্য কোনো আয় নেই।

এ বিষয়ে নন-এমপিও নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোকারম হোসেন বলেন, ‘নিম্ন মাধ্যমিকের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২০০০ সালের পর স্বীকৃতি পেয়েছে। আগে স্কুলগুলো স্বীকৃতির পরই এমপিও পেত। আমাদের প্রথমে পাঠদানের অনুমতি পেতে হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের শর্তপূরণ করতে হয়। এর তিন বছর পর স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এত যাচাই-বাছাইয়ের পর স্বীকৃতি পাওয়ার দেড় যুগ পরও আমরা বেতনবঞ্চিত। দুই মন্ত্রণালয়ের রশি টানাটানি :জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণিকে প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর একটি পরিপত্র জারি করে। নিম্ন মাধ্যমিক এক হাজার ৩৩৩টি বিদ্যালয়কে এমপিওভুক্ত না করেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ঘোষিত পরিপত্র অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই প্রায় দেড় হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করেছে।

এদিকে জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের বিষয়ে সুপারিশ দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্প্রতি একটি কমিটি করেছে। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে প্রধান করে এ কমিটি করা হয়। কমিটির সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব তুলবে। সেদিনের সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন, এটা চলমান বিষয়। ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত যেটা যেভাবে আছে, সেভাবেই চলতে থাকবে।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045771598815918