প্রায় দেড় বছর পর খুলতে যাচ্ছে দেশের সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের মতো নওগাঁর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানের জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার খবরে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সঞ্চার করেছে নতুন উদ্যোমের। এ উপলক্ষে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদানের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে কি না তা পরিদর্শন করছে জেলা প্রশাসন।
জেলা শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১ হাজার ৩৭৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৮২টি মাদরাসা ৫৮ টি কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গন ও পাঠদানের কক্ষ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ অন্যান্য সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সামনে রেখে বিভিন্ন পদক্ষেপও হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রত্যেক অভিভাবককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ করে মাস্ক পরে তাদের সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। জেলা শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করছেন। এতে করে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শূন্যতা থাকে তা পূরণ করা হচ্ছে। অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সংবাদে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবকরাও।
পাহাড়পুর জি এন বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী নিগার সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া ছাড়া স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। বাড়িতে বসে শুধু অ্যাসাইনমেন্ট লিখছি। তাগাদা না থাকায় পড়াতে মন বসে না। স্কুল খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে খুব আনন্দিত।
সুবরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম ও হাট চকগৌরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক সমাজও অনেক খুশি। পাঠদানের বিষয়টি সামনে রেখে আমরা বর্তমানে সরকারের নির্দেশনাকে সামনে রেখে শ্রেণিকক্ষগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছি। চলছে ওয়াশব্লক ও খেলার মাঠ পরিষ্কার। অফিস কক্ষে মজুত করা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্যাভলন, স্প্রে-মেশিন ও মাস্ক। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান কার্যক্রমের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ করেছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইউসুফ রেজা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ইতোমধ্যেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা পাঠদানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। আমি ও আমার দপ্তরের সকল কর্মকর্তারা জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করছি। শিক্ষার্থীদের মাস্ক পড়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়গুলো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরে প্রতিষ্ঠানে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষকরা টেলিফোনে অভিভাবকদের সচেতন করছেন। এছাড়াও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ অন্যান্য বিষয়ে অভিভাবক ও আশেপাশের সচেতন ব্যক্তিদের নিয়ে উঠান বৈঠক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের। আমি আশাবাদী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া সব নিয়ম মেনেই শিক্ষকরা পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রস্তুত রয়েছেন।