সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে একটি সরকারিকৃত কলেজে শনিবারও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছে। গতকাল শনিবার কুড়িগ্রামের রৌমারী সরকারি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা নেয়া হয়। এদিন সকালে ১১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
কলেজ পরীক্ষা পরিচালনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে এ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
জানাগেছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে শুক্রবার ও শনিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। অথচ শনিবারই রৌমারী সরকারিকৃত কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এ দিন ২৬২জন শিক্ষার্থী বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ছাত্র ১৪১ জন ও ছাত্রী ১২১জন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষা বাবদ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে ১ হাজার ৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে ২৪০ টাকা কমিয়ে পরীক্ষা বাবদ ৮০০ টাকা করে ফি নেয়া হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েজন পরীক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা বাবদ ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছিলো। অতিরিক্ত ফি হওয়ায় সব শিক্ষার্থী পরীক্ষা বর্জন করার ঘোষণা দিলে ২৪০ টাকা কমায়। শনিবার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। গরমের কারণে পরীক্ষা কক্ষে থাকা বিদ্যুৎচালিত সিলিং ফ্যান চালু ছিল।
এইচএসসি প্রথম বর্ষ পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মো. জিয়াউল ইসলাম নান্নু দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন, কলেজ বন্ধের বিষয় সরকারি কোন নির্দেশনা আমরা পায়নি। তাই এইচএসসি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়নি।
তবে যে ফি ধরা হয়েছিল তা কিছু কমানো হয়েছে। পরীক্ষা কক্ষে গরমের কারণে ফ্যান চালু রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ সামিউল ইসলাম জীবন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘পরীক্ষা তারিখ আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। তাই পরীক্ষাটি বন্ধ করা হয়নি। পরবর্তী পরীক্ষাগুলো সরকারি প্রজ্ঞাপন আলোকে হবে ‘
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতা মো. আইবুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয় আমার জানা নেই। বিষয়টি জেনে ইউএনও মহোদয়কে জানানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সরকারিকৃত কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আশরাফুল আলম রাসেল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বন্ধের দিনে পরীক্ষা নেয়ার বিষয় আমার জানা নেই। অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে কোন শিক্ষার্থী এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও খোঁজখবর নেয়ার জন্যে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলা হবে।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে শুক্রবার ও শনিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ নির্দেশ দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ২২ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুইদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।