নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের হাতে অনিয়মিতদের প্রশ্ন, কেন্দ্র সচিবকে শোকজ - দৈনিকশিক্ষা

নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের হাতে অনিয়মিতদের প্রশ্ন, কেন্দ্র সচিবকে শোকজ

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি |

কুমিল্লার দেবীদ্বারে এসএসসি পরীক্ষায় ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের এমসিকিউ প্রশ্নপত্র বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার দিন এমন ঘটনায় বিক্ষোভ করেন অভিভাবকেরা।

মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা তদন্তে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ডেপুটি কন্ট্রোলার ড.সফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। এসময় খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন্দ্র সচিব মো. নজরুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন তারা।

জানা যায়, গত সোমবার শুরু হওয়া এসএসসির বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার দিন উপজেলার খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৭নং কক্ষে ১শ ৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিল। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের সিলেবাসে অনুযায়ী ২ জন পরীক্ষার্থীর বিপরীতে আসা ২০টি এমসিকিউ প্রশ্ন কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকরা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করে ফেলেন। প্রায় ১৫ মিনিট পর বিষয়টি একাধিক শিক্ষার্থীর নজরে পড়লে তারা তা দায়িত্বরত শিক্ষকদের অবগত করেন। তাৎক্ষণিক কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।

পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হলে এসে বলেন, ‘যে সকল প্রশ্নপত্রের ওপরে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ লেখা সেগুলো ফেরত দিয়ে দাও। তোমাদের ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের প্রশ্ন দেয়া হবে।’ পরে তাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্রগুলো সংগ্রহ করে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয় এবং পরীক্ষার সময় ১০ মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হয়।

অনিয়মিত এমসিকিউ প্রশ্নে উত্তরদাতা নিয়মিত পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান হাফসার বাবা স্বপন মিয়া। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে জানান, ‘আমার মেয়ে এ বিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের নিয়মিত পরীক্ষার্থী। সে গত রাতে আমাকে জানায়, তার এমসিকিউ ৩০ মিনিটের ৩০ নম্বরের পরীক্ষায় ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের প্রশ্নপত্রের উত্তর দিয়ে এসেছে। যা নিয়মিত শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফলাফল নম্বর ফর্দে যুক্ত হবে না। তাই আমার মেয়ের পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

একই অভিযোগ ওই বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের লুবনা মরিয়ম ও জান্নাতুল ফেরদৌসীর। তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘স্যার আমাদেরকে বলেছেন, যে সব প্রশ্নের উপরে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ লেখা সেগুলো ফেরত দিতে। প্রশ্নপত্রের উপরে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ লেখা দেখে প্রশ্ন ফেরত দেইনি। রাতে বাড়ি গিয়ে দেখি সকল প্রশ্নের উপরের এক কোণে একটি কোড নম্বরসহ ২০২০ লেখা। প্রশ্নের উপর অংশের মাঝখানে লেখা ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের সিলেবাস এবং ২০২০ খ্রিষ্টাব্দেরর সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা।’
 
এ ব্যাপারে খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. নজরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘নিয়মিত এবং অনিয়মিত প্রশ্নপত্রগুলো ভাগ করে বিতরণের জন্য শ্রেণিকক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকদের দিয়েছি। তাড়াহুড়ো করে প্রশ্ন বিতরণের সময় অনিয়মিত ২ শিক্ষার্থীর স্থলে প্যাকেটে থাকা ২০টি প্রশ্নপত্রের ১৮টি আলাদা না করেই সবগুলো প্রশ্ন নিয়মিত প্রশ্নের সাথে বিতরণ করে ফেলায় এ অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রশ্ন সংশোধন করা হয়েছে।’

তবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ১৮টি প্রশ্নপত্র স্টক রেজিস্টারে সমন্বয় করা হয়েছে কি না, ৩ নিয়মিত শিক্ষার্থী অনিয়মিত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিল কীভাবে এবং ওই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ফলাফল বিবরণীতে এই অনিয়মিত এমসিকিউ পরীক্ষার ফলাফল নিয়মিত ফলাফলে যুক্ত হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
 
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পরীক্ষার্থীদের লস টাইম ১০মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

ঘটনা পরিদর্শনে আসা কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ডেপুটি কন্ট্রোলার ড. সফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। কিছু জানতে হলে শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান ও কন্ট্রোলারের সাথে কথা বলতে বলেন তিনি।

তবে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. নজরুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব স্বল্প সময়ের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075161457061768