নিয়োগে জালিয়াতি : বেতনের ২২ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে শিক্ষককে - Dainikshiksha

নিয়োগে জালিয়াতি : বেতনের ২২ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে শিক্ষককে

বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি |

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সাঁইপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এসএম বছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জাল ও নিয়োগবোর্ডের ফলাফল পাল্টে ২০ বছর ধরে চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সময়ে উত্তোলন করা বেতনের সরকারি অংশ প্রায় ২২ লাখ টাকা ফেরতে এবং ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। তিনি তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি দাখিল করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত বছরের ১৫ মে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের রাজশাহীর চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল শীটে এসএম বছির উদ্দীন ঘষামাজা এবং ওই বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করেছেন। এছাড়াও তিনি শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসএম বছির উদ্দীনের নিয়োগকে অবৈধ ও জালিয়াতি উল্লেখ করে এ পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে নেওয়া বেতন-ভাতা প্রায় ২২ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মস্তাফিজুর রহমানের দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সরেজমিনে ও কাগজপত্র দেখে তদন্তে যা পাওয়া গেছে সেটাই প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দেওয়া বিদ্যালয়ের ১১জন অভিভাবকের অভিযোগ থেকে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক এসএম বছির উদ্দীন নিয়োগবোর্ডে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত না হলেও পরে ফলাফল শীটে ঘষামাজা করে নিয়োগ নিয়েছেন। তিনি শ্রবণ প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে পাঠদানে সমস্যা হয়। এছাড়াও তিনি ওই ফলাফল শীটে নিয়োগ বোর্ডের প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরও জাল করেছেন।

অভিযোগে আরও জানা যায়, গত ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় এসএম বছিরসহ সাতজন শিক্ষক সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হলেও তাঁকে (বছির) নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়নি। সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া অন্য ছয় প্রার্থীর পরীক্ষার ফলাফলের ছকে নির্বাচিত লেখা হলেও বছিরের ছকে লেখা রয়েছে কানে কম শোনেন (শ্রবন প্রতিবন্ধী)। এই কারণে তাঁকে নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়নি। তিনি নিয়োগবোর্ডের প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া নিয়োগপত্র নিয়ে সহকারী শিক্ষকপদে যোগদেন।

এছাড়াও নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল শীটে নিজের ছকে লেখা কানে কম শোনেন বাক্যটি মুছে সেখানে “নির্বাচিত” লিখে এর ফটোকপি এমপিওর (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। এ প্রেক্ষিতে তিনি ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে সহকারী শিক্ষক হিসাবে বেতনের সরকারি অংশ পেয়ে আসছেন।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ার সময় তাঁর (বছির উদ্দীনের) জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। মূল রেজুলেশন এবং নিয়োগবোর্ডের নম্বরপত্রের সঙ্গে এমপিওর জন্য দাখিল করা তাঁর নম্বরপত্রের মিল পাওয়া যায়নি। এর পর বিষয়টি জানাজানি হলে মুনসুর রহমান, কাশেম আলী, ফারুক হোসেনসহ ১১জন ছাত্র অভিভাবক গত ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ শিক্ষামন্ত্রী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেন।

একই সময়ে নিয়োগ পাওয়া বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মফিদুল ইসলাম বলেন, তাঁর কাছে যে নম্বরপত্র রয়েছে তাতে এসএম বছির উদ্দীনকে শ্রবণ প্রতিবন্ধী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনিসহ অন্য পাঁচ জনের মন্তরের ছকে নির্বাচিত লেখা হলেও বছিরের ছকে কানে কম শোনেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বছির উদ্দীন জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নম্বরপত্র পরিবর্তন করেছেন বলে তিনিও অভিযোগ করেন।

তবে এসএম বছির উদ্দীন তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি কোনো জালিয়াতি করেনি, এতো বছর পর কেন অভিযোগ করা হচ্ছে পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033059120178223