এগারো মাস আগে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ পান হেলাল উদ্দিন। তবে, যোগদানের পর একদিনও বিদ্যালয়ে যাননি। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে অতিগোপনে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
জানা গেছে, মনিরামপুর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে হেলাল উদ্দিন। বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি নিয়োগ বোর্ড গঠন হয়। সে মোতাবেক হেলাল ১৫ জানুয়ারি নিয়োগপত্র পেয়ে ২২ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তবে যোগদানের পর থেকে হেলাল ওই বিদ্যালয়ে একদিনও উপস্থিত হননি। এমনকি হাজিরা খাতায় নাম বা স্বাক্ষর নেই তার।
অভিযোগ উঠেছে, ওই সময়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের চাচাতো ভাই চঞ্চল ভট্টাচার্য্য এবং প্রধান শিক্ষক মশিয়ূর রহমান অতিগোপনে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে হেলাল উদ্দিনকে চাকরিতে যোগদান করান। আর এসব কাজে সহযোগিতা করেন তৎকালীন দায়িত্বরত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার।
অবশ্য, অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি জানতেন না অভিভাবক সদস্য রবিউল ইসলামসহ অনেকেই। এমপিওভুক্তির আওতায় না আসতে পেরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন হেলাল। সম্প্রতি অফিস সহকারী নিয়োগের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। গত ৬ নভেম্বর হেলাল নিয়োগ বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
এদিকে সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, নিয়োগপ্রাপ্তির পর একদিনও স্কুলে উপস্থিত হননি হেলাল উদ্দিন। এমনকি হাজিরা খাতায় দেখা মেলেনি তার নাম ও স্বাক্ষর। বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাকে কখনো অফিসে আসতে দেখেননি।
সিনিয়র শিক্ষক আবু নছর বলেন, হেলাল এ প্রতিষ্ঠানেরই ছাত্র ছিল। চাকরি পেয়েছে কিনা তা সুস্পষ্টভাবে বলতে পারব না।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরুণ কান্তি হালদার বলেন, চলতি বছরের ৭ মার্চ ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমি হেলালকে কখনো পাইনি। এমনকি অফিস সহকারী পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন কোনো কাগজপত্র আমার হাতে বা অফিসে নেই।
হেলাল উদ্দিন জানান, অফিস সহকারী পদে তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। নভেম্বর মাসের এমপিওতে তার নাম বেতনভুক্ত হতে চলেছে। রাজনৈতিক জটিলতার কারণে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে দাবি করেন।
মনিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন বলেন, হেলালের বেতনভুক্ত হওয়ার জন্য দুই মাস আগে সুপারিশপত্র পাঠানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, অনুপস্থিতির বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।