মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের পর সোনাগাজী থানার ওসিকে বাঁচাতে চিঠি লিখে আলোচনায় আসা ফেনীর সেই এসপি এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে ফেনী থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। রোববার (১২ মে) বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সারাদেশে আলোচিত নুসরাত হত্যাকাণ্ডের পর ইতোমধ্যে সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডে এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে গুঞ্জন ছিল। শিগগিরই তাকে বরখাস্ত করা হবে এমন কথাও শোনা যাচ্ছিল।
পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেছেন, নুসরাত হত্যার পর পুলিশ সদর দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কমিটির প্রতিবেদনে কিছু বিচ্যুতি ও দায়িত্ব অবহেলার বিষয় উঠে আসে। এসব বিষয়ে এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের জবাব সন্তোষজনক না হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত ২৭ মার্চ ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এরপর ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত পরীক্ষা দিতে মাদরাসায় যান। সে সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত। ওই ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে সোনাগাজী থানায় অভিযোগ নিয়ে যাওয়া নুসরাতের সঙ্গে ওসি মোয়াজ্জেমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন নুসরাতের পরিবারকে অসহযোগিতার অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয় ওসিকে। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ী চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।