পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বন্ধ চান শিক্ষানীতি কমিটির কো-চেয়ারম্যান - দৈনিকশিক্ষা

পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বন্ধ চান শিক্ষানীতি কমিটির কো-চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষানীতি ২০১০ এর কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, “শুধু এবারের জন্য নয়, আমি চাই পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক। পঞ্চম শ্রেণি শেষে সমাপনী জাতীয় পরীক্ষা আগে ছিল না। এটি এভাবে হওয়া উচিত নয় বলেই আমি মনে করি। আগে পঞ্চম শ্রেণির পর একটি বৃত্তি পরীক্ষা হতো। বৃত্তি পরীক্ষার জন্য কিছু ভালো শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে তাদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হতো। অন্যরা অবহেলিত থাকত।”

এক সাক্ষাতকারে তিনি সাংবাদিকদের জানান, “২০১০ শিক্ষা প্রণয়ন কমিটি সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে উপজেলা বা জেলাভিত্তিক অভিন্ন প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার কথা বলে যে, পরীক্ষায় সংশ্নিষ্ট সব শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এই পরীক্ষার ভিত্তিতে বৃত্তি প্রদানের কথা বলা হয়। পরে সেই প্রস্তাবিত পরীক্ষাটি পঞ্চম শ্রেণি শেষে জাতীয় সমাপনী পরীক্ষা করা হয়।” 

তিনি আরো বলেন, এই পরীক্ষাটি জাতীয়ভাবে গ্রহণ বন্ধ করা উচিত বলে আমি মনে করি। এর কারণে ওই প্রাথমিক পর্যায়েই শিক্ষায় বাণিজ্যিকীকরণ বেড়েছে। কোচিং, গাইড নোটের প্রভাব বেড়েছে। সচ্ছল পরিবারগুলো দেখা গেছে, এক শিক্ষার্থীর পেছনে কয়েকজন শিক্ষকও নিয়োগ করছে। দরিদ্র পরিবারগুলো তা করতে পারে না। এটি বৈষম্য সৃষ্টি করছে এবং এর পেছনে এক ধরনের শিক্ষা বাণিজ্য গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে শিক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারে না। ফলে তারা ভালো ফল করে না এবং আর তেমন এগোতে পারে না- শিক্ষায়, জীবন গঠনে, উপযুক্ত নাগরিকত্বে।

কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ আরো বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বলা যায় পরীক্ষার মধ্যেই আবদ্ধ হয়ে আছে। পঞ্চম শ্রেণি শেষে জাতীয় পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণি শেষে জাতীয় পরীক্ষা, দশম শ্রেণি শেষে জাতীয় পরীক্ষা আবার দ্বাদশ শ্রেণির পর জাতীয় পরীক্ষা। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ও অন্যান্য পরীক্ষা তো রয়েছেই। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার বেড়াজালে আবদ্ধ। অথচ উন্নত বিশ্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই মূল্যায়ন করা হয় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।

তিনি বলেন, উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ফিনল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের ১৯ বছর বয়সের আগে জাতীয় কোনো পরীক্ষাই নেই। মূল্যায়ন করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত পড়ার পর তিন বছরব্যাপী মেট্রিকুলেশন পর্যায়। অর্থাৎ ১৯ বছর বয়সে মেট্রিকুলেশন নামে প্রথম একটি পাবলিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের দিতে হয়। অথচ সে দেশে শিক্ষা তুলনামূলক বিশ্বমানে শীর্ষে এক, দুই, তিনের মধ্যে থাকে।

তিনি বলেন, আমাদের পরীক্ষানির্ভর শিক্ষা হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা না বুঝে মুখস্থবিদ্যায় মনোযোগী হয়। ফলে বাস্তব জীবনে এই শিক্ষা অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপযোগী হচ্ছে না। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়ই শিক্ষার্থীদের ব্যাপক দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। ভাইভা নিতে গেলেও দেখা যায় তারা অনেকেই মৌলিক বিষয়গুলো জানে না; তত্ত্বগত বিষয়ের বিশ্নেষণে তারা অসহায়। তারা বুঝে পড়েনি, চিন্তা করতে শেখেনি এবং প্রশ্ন করে করে আরও শিখতে সুযোগ পায়নি। মুখস্থ করেই ভালোভাবে পাস করে এসেছে। 

খলীকুজ্জামান বলেন, এবার করোনাদুর্যোগ পরিস্থিতিতে পঞ্চম শ্রেণি শেষে সমাপনী পরীক্ষা এবং জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হচ্ছে না। আমি চাই পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038869380950928