নওগাঁয় স্ত্রীর সঙ্গে পরকিয়া সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন ছকু (৩৬) নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরীকে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁ সদর উপজেলার হাড়িয়াগাছি গ্রামে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে ৬ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
নিহত তোফাজ্জল হোসেন হারিয়াগাছি গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে ও হারিয়াগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এই ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের জনৈক দিলদার হোসেনর স্ত্রী মনি বেগমের (২৭) সাথে তোফাজ্জল হোসেনের পরকীয়া রয়েছে, এমন সন্দেহে দিলদার হোসেন ও তার লোকজন গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তোফাজ্জল হোসেনকে (ছকু) রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রামের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারপিট করে।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দিলদার হোসেন ও তার সহযোগী একই গ্রামের সোহেল রানা, পরাগ হোসেন, আরিফ হোসেন ও সেলিনা বেগমসহ আরও কয়েকজন লাঠিসোটা দিয়ে তোফাজ্জলকে দফায় দফায় মারপিট করে। এক সময় তোফাজ্জল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা তার বিরুদ্ধে চুরির আভিযোগ এনে নওগাঁ সদর থানায় খবর দেয়া হয়।
ওই অবস্থায় হাসপাতালে না নিয়ে জোর করে তোফাজ্জলকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরিবারের লোকজন ওই রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরের দিন বুধবার রাত ১টার দিকে তোফাজ্জল মারা যায়।
এ ঘটনায় নিহত তোফাজ্জলের বড় ভাই উজ্জল হোসেন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকলে নওগাঁ সদর মডেল থানায় ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমার নিরাপরাধ ভাইকে শুধু সন্দেহ করেই পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা বাঁধা দিয়েও তাদের থামাতে পারিনি। উল্টো আমার পরিবারের সকলকে তারা মারধর করার হুমকি দেয়। আমি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার আমরা চাই।
নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহরাওয়াদী হোসেন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, খবর পাওয়ার পরেই সকালে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়। আসামিরা বাড়ি-ঘরে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেছে। তাই তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।