মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘন করে একাডেমিক স্বীকৃতির আদেশ জারি করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৯ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হলে তবেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একাডেমিক স্বীকৃতি পেতে পারে। কিন্তু গত বছর মাত্র ২ জন পরীক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটি থেকে এইচএসসিতে কৃতকার্য হলেও একাডেমিক স্বীকৃতির আদেশ জারি করিয়ে নিয়েছে চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা মহাবিদ্যালয়।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানকে একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদানে ওই কলেজ থেকে পাবলিক পরীক্ষায় অন্তত ৯ জন কৃতকার্য হতে হবে। কিন্তু চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী পাবলিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেনি।
জানা গেছে, ওই কলেজ থেকে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১১ শিক্ষার্থী। পাস করে মাত্র ২ জন। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে ৪ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র ১ জন পাস করে। কলেজটিতে কাম্য সংখ্যক শিক্ষক নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কলেজটিতে ২ জন নারী শিক্ষকসহ ৯ শিক্ষক রয়েছেন।
কাম্যসংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক না থাকলেও কোন এক গায়েবী শক্তির জোরে গত ৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা মহাবিদ্যালয়কে মাধ্যমিক পর্যায়ে একাডেমিক স্বীকৃতির আদেশ জারি করা হয়।
এ আদেশের প্রেক্ষিতে গত ১১ নভেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রথম অস্থায়ী স্বীকৃতি দেয়া হয় চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা মহাবিদ্যালয়কে। বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক স্বাক্ষরিত স্বীকৃতি পত্রে বলা হয়, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই থেকে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন পর্যন্ত দুই বছর মেয়াদে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অস্থায়ী স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো হুমায়ুন কবির কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, উপজেলায় মাত্র দুইটি মহিলা কলেজ রয়েছে। আমার কলেজটি উপজেলা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে চর অঞ্চলে অবস্থিত। বছর খানেক আগে চর অঞ্চলে নারী শিক্ষার প্রসারে কলেজটির একাডেমিক স্বীকৃতির আবেদন করি। সে প্রেক্ষিতে কলেজটিকে একাডেমিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. ফারাজ উদ্দিন তালুকদার দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, গত ৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা একাডেমিক স্বীকৃতির আদেশের প্রেক্ষিতে বোর্ড থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।