পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - দৈনিকশিক্ষা

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক:  নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দশম শ্রেণিশেষে যে পাবলিক পরীক্ষা হবে তার নাম ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চলে আসা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষাই থাকছে। নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তুত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে— লিখিত মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ আর কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ রাখা।

গত সোমবার (২২ এপ্রিল) কমিটি মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) একটি বৈঠক করে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান। তবে, ওই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মশিউজ্জামানের প্রশ্ন শুনে হতবাক শিক্ষাবোর্ডে কর্মরত ও পাবলিক পরীক্ষায় অনুষ্ঠানে অভিজ্ঞ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা।  

লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যোগ্যতা ও কার্যক্রম ভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি লিখিত (পরীক্ষা) মূল্যায়ন রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া মূল্যায়নে আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে লিখিত মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ রাখার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে স্কুল ভিত্তিক ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়নে একই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। 

পরীক্ষার মোট সময় কয় ঘণ্টা হবে সে বিষয়ে সুপারিশ অংশে কিছু উল্লেখ করেনি। তবে কমিটি-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, লিখিত ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন মিলিয়ে সময়টি হবে পাঁচ ঘণ্টা। এর মধ্যে লিখিত অংশের সময় কত এবং কার্যক্রমভিত্তিক অংশের জন্য সময় কত হবে, তা বিষয়ের চাহিদা অনুযায়ী ঠিক করা হবে।

 

এ ছাড়া মূল্যায়ন অ্যাপ নৈপুণ্য হালনাগাদ করা, চূড়ান্ত মূল্যায়নে সনদ/ট্রান্সক্রিপ্টের ৭ পর্যায়ের স্কেলে যোগ্যতা ও পারদর্শিতার সূচক অভিভাবক ও অংশজনদের অবহিত করারও সুপারিশ করেছে কমিটি। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে কিছু সুপারিশ রয়েছে। প্রতিবেদনটি শিগগিরই জমা দেওয়া হবে।’

নতুন শিক্ষাক্রম গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হয়। আর চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হয় দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এরপর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে একাদশ এবং ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দে দ্বাদশ শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। 

নতুন শিক্ষাক্রমে বর্তমানে দুই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়। এর একটি বছরজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিখনকালীন মূল্যায়ন, অন্যটি বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়ন। শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী, প্রাক্–প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নেই। এ তিন শ্রেণিতে হবে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন। আর চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে। 

নতুন শিক্ষাক্রমের এই মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অভিভাবক–শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবিদদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট দিনে কোনো লিখিত পরীক্ষা না থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে না। 

নতুন শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বোঝাতে নম্বর কিংবা গ্রেডের পরিবর্তে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত ব্যবহার করা হবে। ত্রিভুজ হচ্ছে সবচেয়ে দক্ষ বা ভালো, বৃত্ত হচ্ছে মোটামুটি ভালো এবং চতুর্ভুজ মানে উন্নতি প্রয়োজন।

শিক্ষাবিদ–অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ, অসন্তোষ এবং লিখিত পরীক্ষা যুক্ত করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নপদ্ধতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন মহিবুল হাসান চৌধুরী। গত ১৪ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাবর্ষ মাত্র শুরু হয়েছে। ধারাবাহিক মূল্যায়নের কাজগুলোও শুরু হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো সমস্যা মনে হয়, তাহলে পরিবর্তন অবশ্যই আসবে।’ 

জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এনসিটিবি এবং শিক্ষা কারিকুলামের সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষ ও ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি মূল্যায়নপদ্ধতির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে জন-অসন্তোষ নিরসনে তা যাচাই–বাছাইয়ের পরামর্শ দেন। এরপরই ৪ ফেব্রুয়ারি মূল্যায়নপদ্ধতি ও কারিকুলাম নিয়ে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি গঠনের কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন এনসিটিবি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিরা।

শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা - dainik shiksha তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! - dainik shiksha কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন - dainik shiksha ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট - dainik shiksha কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর - dainik shiksha স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029020309448242