পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন - দৈনিকশিক্ষা

পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন

দৈনিক শিক্ষাডটকম, আদালত প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, আদালত প্রতিবেদক : বহুল আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর ও ভাঙচুরসহ ভয়ভীতি দেখানোর সত্যতা পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলার পিবিআই পরিদর্শক মো. মনির হোসেন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে পরীমণি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালতে মামলার প্রতিবেদন গ্রহণের বিষয়ে শুনানি হয়। পরীমণি আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন মামলার বাদী ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। বিচারক শুনানি শেষে পরীমণি ও জিমিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আসামি পরীমণি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জুন রাত ১২টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবে সাদা রঙের জিপ গাড়ি করে বোট ক্লাবে প্রবেশ করেন পরীমণি।

ক্লাবের দোতলায় উঠে পরীমণি ও ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি বারের ভেতরে প্রবেশ করেন এবং টিভির সামনের টেবিলে বসেন। টেবিলে এ মামলার সাক্ষী অমিও বসেন। সৌজন্যতার খাতিরে অমি তাদেরকে স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার নিজ খরচে পরিবেশন করে আপ্যায়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরীমণি একটি এক লিটারের ব্লু লেবেল মদের বোতল অর্ডার করেন। পরীমণি ও তার সঙ্গে থাকা জিম ও বনি নিমিষেই সেই বোতলের মদ পান করে বোতল খালি করে ফেলেন এবং অনুরূপ আরেকটি বোতলের অর্ডার করেন। তারা ওই বোতলের আংশিক মদ পান করেন।

আড্ডার একপর্যায়ে তাদের ২/৩ টেবিল পেছনে বোটক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদকে আরো দুইজন ব্যক্তির সঙ্গে বসা দেখতে পান অমি। তখন অমি পরীমণিকে নিয়ে নাসির মাহমুদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং পুনরায় তাদের টেবিলে এসে বসে মদ্যপানসহ গল্পগুজব করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর নাসির মাহমুদ ও তার সঙ্গে থাকা আরো দুইজন যখন বার থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পরীমণি নাছির মাহমুদকে ডেকে বললেন, ভাই আমি আসলাম, আর আপনি চলে যাচ্ছেন? আমাদের সঙ্গে আরেকটু বসেন। আসেন কিছুক্ষণ গল্প করি।

তখন পরীমণির অনুরোধে নাসির মাহমুদ ফিরে এসে পুনরায় তার টেবিলে বসেন। কিছুক্ষণ পর ড্রিংকস শেষে পরীমণি ওয়েটারকে আরো এক লিটারের তিনটি ব্লু লেবেল মদের বোতলসহ দুই বোতল ওয়াইন পার্সেল দেয়ার জন্য অর্ডার করেন। ওয়েটার তখন পরীমণিকে দুই বোতল ওয়াইন পার্সেল দিলেও ব্লু লেবেল মদের বোতল স্টকে না থাকায় পার্সেল দিতে পারেননি।

তখন পরীমণি ডিসপ্লেতে থাকা একটি ব্লু লেবেল বোতল পার্সেল করে দিতে বললে ওয়েটার জানান বোতলটি বিক্রির জন্য নয় এবং ক্লাবের মেম্বার ছাড়া পার্সেল দেয়া যাবে না। কিন্তু পরীমণি জোর করে ওই বোতল নিতে চান এবং টেবিলে হট্টগোল করতে থাকেন। পরীমণি উত্তেজিত হয়ে কার্ডহোল্ডার বের করে দুই-তিনটি ব্যাংক কার্ড দেখিয়ে বলেন, আমি কি ফকিরনি? আমার বিল আমি পরিশোধ করবো। আমি এটা নেবোই।

তখন পরীমণির সঙ্গে থাকা ফাতেমা বনি বলেন, ওনাদের যদি রুলস থাকে, মেম্বার ছাড়া নেয়া যাবে না, তাহলে তুমি নিও না। তখন পরীমণি বনিকে থাপ্পড় মেরে বলে, আমাকে দেখে কি মাতাল মনে হয়? পরীমণির সঙ্গে থাকা জিম তাকে শান্ত করতে গেলে তাকেও পরীমণি থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পরীমণি খুবই উত্তেজিত হয়ে টেবিলের উপর থাকা গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ফ্লোরে এদিক ওদিক ছুঁড়তে থাকেন। তখন নাসির মাহমুদ ক্লাবের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পরীমণিকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এতে পরীমণি আরো ক্ষেপে গিয়ে একটি অ্যাশট্রে নিয়ে তার দিকে ছুড়ে মারেন। যা তার ডান কানের ওপরে মাথায় লাগে। তখন নাসির মাহমুদ ক্লাবে পরীমণিকে সঙ্গে করে আনায় অমির  ওপর রেগে যান এবং বলেন, এ রকম বেয়াদব মহিলা নিয়ে কেনো ক্লাবে নিয়ে আসেন, কাল আপনার নামে নোটিশ হবে। এদেরকে নিয়ে বেরিয়ে যান।

তখন জিম তেড়ে এসে বাদী নাসির মাহমুদকে গালমন্দ করতে করতে ২/৩ টা কিলঘুসি মারেন। এরপর আবারও পরীমণি বারের ভেতরে যত্রতত্র গ্লাস ছুড়ে ভাঙচুর করতে থাকেন। একটি গ্লাস নাসির মাহমুদের বুকে লাগলে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। তখন নাসির মাহমুদ বোট ক্লাব ত্যাগ করে চলে যান। ক্লাব ত্যাগ করার মুহূর্তে পরীমণিকে ক্লাব ছেড়ে চলে যেতে বলার জন্য ক্লাবের নিচে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ডকে নির্দেশ দিয়ে যান।

বার ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য সিকিউরিটি গার্ড পরীমণিকে বারবার বললেও তারা যেতে চাননি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সিকিউরিটি গার্ড বারের লাইট ও এসি কমিয়ে দেয়। তারপরও পরীমণি যেতে না চাইলে অমি তাকে বার থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং পরীমণির সঙ্গে থাকা জিম ও সিকিউরিটি গার্ড তাকে ধরে গাড়িতে তুলে দেয়। ক্লাবে তাদের খাওয়া দুই বোতল ব্লু লেবেলের দাম ও পার্সেলে নেয়া দুই বোতল ওয়াইনের দাম পরিশোধ না করেই তারা ক্লাব থেকে চলে যায়। এই চারটি বোতলের দাম ৮৭ হাজার ৬৫০ টাকা। এ ছাড়া ক্লাবের বারের ভেতরে গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ভাঙচুর করায় আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

 

একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে - dainik shiksha একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের - dainik shiksha ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম - dainik shiksha থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান - dainik shiksha প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052030086517334